মিরপুর টেস্টে ইতিহাস গড়ে দেশের শীর্ষ টেস্ট বোলার হয়ে উঠলেন তাইজুল ইসলাম। উইকেট পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সতীর্থদের উচ্ছ্বাসে ভাসলেন তিনি। শনিবার মিরপুরে আম্পায়ার আঙুল তুলতেই সতীর্থদের অভিনন্দনে স্নাত হলেন ৩৩ বছর বয়সী ক্রিকেটার। মুশফিক তাকে কোলে তুলে উঁচু করে ধরলেন, যেন জানান দিলেন, দেশের টেস্ট ইতিহাসে এখন তিনিই শীর্ষে। প্রথম ইনিংসে চার উইকেটে সাকিবের ২৪৬ উইকেট স্পর্শ করার পর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই অ্যান্ড্রু বালবার্নিকে এলবিডব্লিউ করে ছাড়িয়ে যান সাকিবকে। বাংলাদেশের টেস্টে এখন সবচেয়ে বেশি উইকেট তাইজুলের।
মিরপুরে শনিবার আইরিশদের ৫০৯ রানের লক্ষ্য দিয়ে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। নতুন বলে আক্রমণে আসেন তাইজুল। কাক্সিক্ষত উইকেটের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা তাকে করতে হয়নি। তৃতীয় ওভারেই দেখা পান সেই উইকেটের। জোরের ওপর করা ডেলিভারির গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারেননি বালবার্নি। তাইজুলের আবেদনে আম্পায়ারের আঙুল তুলে নেন। রিভিউ নিয়ে রক্ষা পাননি আইরিশ অধিনায়ক। দেশের সফলতম টেস্ট বোলার হওয়ার পর তার সামনেই এখন আরেকটি মাইলফলকের হাতছানি দিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ২৫০ উইকেট ছুঁতে আরেক ধাপ এগিয়ে যান তিনি। বালবার্নির পর ফিরিয়ে দেন পল স্টার্লিংকেও।
সাকিবের ২৪৬ উইকেট ছিল ১২১ ইনিংসে। তাকে ছাড়িয়ে যেতে তাইজুলের লাগল ১৯ ইনিংস কম (১০২)। অবশ্য বোলিং গড় ও স্ট্রাইক রেটেও কিছুটা এগিয়ে তাইজুল। সাকিবের গড় ৩১.৭২, স্ট্রাইক রেট ৬৩.৭। তাইজুলের বোলিং গড় ৩০.৯৮, স্ট্রাইক রেট ৬১.০০। ২০১৪ সালে অভিষেক হলেও এই সংস্করণে তাইজুল নিয়মিত হয়েছেন ২০১৭ সাল থেকে। সাকিবও ততদিনে শুরু করে দেন বেছে বেছে টেস্ট খেলা। স্পিন আক্রমণের মূল অস্ত্র হওয়ার এই সুযোগ লুফে নিতে ভুল করেননি তাইজুল। তালিকায় এর পরই আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরপুর টেস্টের শেষ ইনিংস শুরুর আগে তার উইকেট ৯৭ ইনিংসে ২০৯টি। শত উইকেটের ক্লাবে আছেন বাংলাদেশের আর কেবল মোহাম্মদ রফিক (১০০)। ২০০৯ সালে টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করা মাশরাফি বিন মুর্তজা ৭৮ উইকেট নিয়ে এখনো আছে শীর্ষ পাঁচে।
আয়ারল্যান্ডকে এই টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার দোরগড়ায় বাংলাদেশ। চার দিনের খেলা শেষ। জিততে আর চার উইকেট দরকার বাংলাদেশের, আর আয়ারল্যান্ডকে করতে হবে ৩৩৩ রান। আয়ারল্যান্ডকে ৫০৯ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে টানা দুই ওভারে অ্যান্ডি বালবির্নি ও পল স্টার্লিংকে ফেরায় তারা। দুই উইকেট শিকার করেছেন হাসান মুরাদ। ২৬ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর কেড কারমাইকেল ও হ্যারি টেক্টর ৫১ রানের জুটি গড়েন। কারমাইকেলকে (১৯) বিশের ঘর ছুঁতে দেননি হাসান মুরাদ। ৮৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চা বিরতিতে যায় আয়ারল্যান্ড।
টেক্টর হাফ সেঞ্চুরি করার দুই বল পর আউট হলে ভাঙে ৪১ রানের জুটি। তারপর কুর্টিস ক্যাম্ফার শক্ত হাতে ক্রিজে পড়ে থাকলেও আরও দুই উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। দুইবার জীবন পাওয়া স্টিফেন ডোহেনি (১৫) বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। লরকান টাকার (৭) আগের ইনিংসে ৭৫ রান করলেও এবার দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ও ক্যাম্ফার ক্রিজে আছেন। ক্যাম্ফার ৩৪ ও ম্যাকব্রাইন ১১ রানে খেলছেন। এর আগে বাংলাদেশ দিন শুরু করেছিল ১ উইকেটে ১৫৬ রানে। সাদমান ৭৮ রানে থামেন।

