থাইল্যান্ডের ফুকেটে চলমান ৭৪তম মিস ইউনিভার্স আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন তানজিয়া জামান মিথিলা। যিনি প্রথম বাংলাদেশি, মিস ইউনিভার্সে ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছেন। প্রতিযোগিতার ভোটিং পুলে ৫ নম্বরে উঠেই তাক লাগিয়েছেন দুদিন আগে। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি চমকে দেন ২ নম্বরে উঠে এসে। পিপলস চয়েস ভোটিং পর্বে অবস্থান করছেন সেরা দুই-এ। তার ভোট সংখ্যা ২ লাখ ৮১ হাজারেরও বেশি।
মিথিলা তার ফেসবুক পেজ থেকে বৃহস্পতিবার সকালে সেরা ২ এ উন্নীত হওয়ার সুখবরটি জানান। এটাও বলেন, বাংলাদেশের ১০ লাখ মানুষ যদি প্রতিদিন ১০টা করে ভোট দেয়, তাহলে ৬ দিনে কয়েক কোটি ভোট পড়বে তার পক্ষে। ১০টা ভোট দিতে সময় লাগে মাত্র ১০-১২ মিনিট। ১৮-১৯ কোটি মানুষের দেশে শুধুমাত্র ভোটের অভাবে যদি বাংলাদেশের প্রতিনিধি হেরে যায়, এটা কি মেনে নেওয়া যায়? এটাও বলেন, ১২১টা দেশের মধ্যে আমি তথা বাংলাদেশ এখন ২ নম্বরে আছে। আশা করছি আর মাত্র ৫০ হাজার ভোট পেলে উঠে যাবো এক নম্বরে। আমি আত্মবিশ্বাসী, অপেক্ষা শুধু আপনাদের ভোটের। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া হবে।
এরপর তিনি ভোট দেওয়ার নিয়ম জানিয়ে দিলেন। মিথিলা জানান, অ্যাপ স্টোর বা গুগল প্লে স্টোর থেকে মুঠোফোনে ‘মিস ইউনিভার্স’-এর অফিসিয়াল অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। অ্যাপ ইনস্টল করে অ্যাকাউন্ট খুলুন বা লগইন করুন। এক্ষেত্রে ইমেল/সোশ্যাল লগইন অপশন থাকতে পারে। অ্যাপে প্রবেশ করে ঠড়ঃব বাটনে ক্লিক করুন। চবড়ঢ়ষব’ং ঈযড়রপব সেকশনে সিলেক্ট করে ঞধহমরধ তধসধহ গবঃযরষধ-কে নির্বাচন করুন। এই সেকশনে ফ্রি ভোট পাওয়ার অপশন আছে সেগুলো ক্লেইম করে ব্যবহার করুন এবং বাংলাদেশকে ভোট দিন।
একাধিক ফ্রি ভোট পেতে একটি বিজ্ঞাপনের ভিডিও দেখুন এবং বিনামূল্যে ভোট সংগ্রহ করুন। এরপর বাংলাদেশকে ভোট দিন। সঙ্গে বললেন, ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত এই ভোট দেওয়া যাবে বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে।
ভোট দেওয়ার জন্য মিস ইউনিভার্স অ্যাপে গিয়ে বাংলাদেশ সিলেক্ট করে গেট ভোট নির্বাচন করতে হবে। তারপর পিপলস চয়েস সেকশনে গিয়ে তানজিয়া জামান মিথিলাকে নির্বাচন করতে হবে। এরপরও প্রতিটি বিজ্ঞাপন দেখার মাধ্যমে আরও একটি করে যত খুশি ততো ভোট দেওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, তানজিয়া জামান মিথিলা চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২৫’-এর মুকুট জেতেন। তিনি শুধু একজন মডেল ও অভিনেত্রীই নন, বরং বাল্যবিবাহবিরোধী প্রচারণা এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে কাজের জন্যও পরিচিত। ২০২০ সালেও তিনি একই খেতাব অর্জন করেছিলেন, তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক পর্বে অংশ নিতে পারেননি।
এবারের আসরে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে মিথিলা থাইল্যান্ড থেকে বলেন, আমার কাছে স্বপ্নের মতো লাগছে। গর্বিত লাগছে। বিদেশে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করার এমন সুযোগ কার না ভালো লাগবে বলুন। এখানে এসে আমি দেশের মানুষের ভালোবাসায় আরও বিস্মিত হয়েছি। এত এত মানুষ আমাকে শুভ কামনা জানাচ্ছে। ভোট করছে, যা আমাকে নতুনভাবে দেশকে নিয়ে ভাবার সুযোগ করে দিয়েছে। নতুন করে দেশের মানুষের জন্য কিছু করার প্রেরণা দিচ্ছে। মুকুট জয়ের বিষয়েও বেশ আত্মবিশ্বাসী টাঙ্গাইলের মেয়ে মিথিলা। তার ভাষায়, আমি শতভাগ আশা নিয়ে এখানে এসেছি।
মুকুট জয়ের সব যোগ্যতা বাংলাদেশের রয়েছে। আমি ভয় পাই না। আমার লক্ষ্য একটাই বাংলাদেশের নামটা বিশ্বমঞ্চে উজ্জ্বল করা। আমি বিশ্বাস করি, এবার মুকুটটা আমরা ঘরে নিয়ে আসতে পারব। বলা দরকার, বিশ্ব প্রতিযোগিতার মঞ্চের বাইরে মিথিলা এরমধ্যে যুক্ত হয়েছেন বলিউডের ‘রোহিঙ্গা’ ও ‘লাইফ’ নামের দুটি সিনেমাতে।

