মানুষের তথ্য প্রয়োজন। আর সেই তথ্যের ‘সোর্স’-এর অভাবে নেই। একসময় তথ্য পেতে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তথ্য খোঁজার গন্তব্য বদলে গেছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের। এখন চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই টুল ও গুগলের এআই ওভারভিউস ফিচারের মাধ্যমে একসঙ্গে অনেকগুলো ওয়েবসাইটের তথ্যের সমাহার পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে ওয়েবসাইটে দর্শক বা ভিজিটরের সংখ্যা ব্যাপকহারে কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে উইকিপিডিয়া।
অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ও উইকিপিডিয়ার মূল সংগঠন ‘উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন’ বলেছে, গত বছর একই সময়ের তুলনায় তাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট বা ট্রাফিক ৮ শতাংশ কমেছে। এর কারণ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন এখন জেনারেটিভ এআই ব্যবহার করে সরাসরি উত্তর দিয়ে দিচ্ছে। ফলে ‘আমাদের মতো সাইটের লিংকে’ যাচ্ছেন না ভিজিটররা।
উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন নিজেদের ওয়েবসাইটের বট শনাক্তকরণ ব্যবস্থা আপডেটের পরই উইকিপিডিয়ায় মানুষের ভিজিট কমে যাওয়ার বিষয়টি তাদের নজরে আসে বলে প্রতিবেদেন লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
এক ব্লগ পোস্টে মার্শাল মিলার লিখেছেন, ‘এই পরিবর্তনের পর আমরা গত কয়েক মাস ধরে উইকিপিডিয়ায় মানুষের পেইজভিউ কমতে দেখছি, যা ২০২৪ সালের একই মাসের তুলনায় প্রায় ৮ শতাংশের মতো কমেছে।’
‘আমরা মনে করি এই কমতির কারণ, জেনারেটিভ এআই ও সামাজিক মাধ্যমের প্রভাব, যা মানুষের তথ্য খোঁজার ধরনে পরিবর্তন এনেছে, বিশেষ করে যখন বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন সরাসরি উত্তর দিচ্ছে, বেশিরভাগ সময়ই যার উৎস হচ্ছে উইকিপিডিয়ারই তথ্য’-যোগ করেন তিনি।
তবে উইকিপিডিয়াই একমাত্র ওয়েবসাইট নয়, যার ভিজিটর সংখ্যা জেনারেটিভ এআইয়ের কারণে কমে যাচ্ছে। অনেক প্রকাশক বলছেন, তাদের কনটেন্ট থেকে তথ্য নিয়ে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি উত্তর দিলেও তাদের সাইটে ভিজিটর পাঠাচ্ছে না।
জুলাইয়ে ‘কম্পিটিশন অ্যান্ড মার্কেটস অথরিটি’কে দেওয়া এক বিবৃতিতে ‘মেইলঅনলাইন’ ও ‘মেট্রো’র মালিক ‘ডিএমজি মিডিয়া’ বলেছে, মার্কিন সার্চ জায়ান্ট গুগলের এআই ওভারভিউস ফিচারের কারণে তাদের ওয়েবসাইটে ক্লিক-থ্রু রেট ৮৯ শতাংশ কমেছে।
গত মাসে গুগলের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে ‘রোলিং স্টোন’-এর কোম্পানি ‘পেন্সকে মিডিয়া কর্পোরেশন’। মামলায় অভিযোগ উঠেছে, গুগল তাদের আর্টিকেলের বিভিন্ন সংক্ষিপ্তসার এআই দিয়ে তৈরি করছে।

