ভূমিকম্প, সুনামি, বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বর্তমানে সুনামি, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম তথ্য জানার সুযোগ মিললেও ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানার কার্যকর পদ্ধতি এখনো আবিষ্কার হয়নি। আর তাই দীর্ঘদিন ধরেই ভূমিকম্পের ধরন ও পূর্বাভাস জানার জন্য কাজ করছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। এবার যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার ডর্নসাইফ কলেজের বিজ্ঞানীরা ‘সুপারশিয়ার’ নামের বিরল ভূমিকম্পের তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, সুপারশিয়ার ভূমিকম্প বিশেষ ধরনের ভূমিকম্প। এই ভূমিকম্পের তরঙ্গ সাধারণ ভূমিকম্পের চেয়ে দ্রুতগতিতে চলে। ফলে সোনিক বুমের মতো তীব্র ভূমিকম্প তৈরি হয়, যা পূর্বের ধারণার চেয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে মিয়ানমারে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প এমনি এক ভূমিকম্প ছিল।
সুপারশিয়ার ভূমিকম্পের বিষয়ে বিজ্ঞানী আহমেদ এলবান্না জানান, এটি ধ্বংসাত্মক তরঙ্গ তৈরি করে, যা একটি সাধারণ ভূমিকম্পের চেয়ে শক্তিশালী। আর এ কারণেই ২০২৫ সালের ২৮ মার্চ মিয়ানমারে এক ভূমিকম্পে ৪৬০ কিলোমিটারের বেশি জমিতে ফাটল দেখা দেয়। শুধু তা–ই নয়, সাধারণ মাত্রার ভূমিকম্পের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ক্ষতি হয়। এ বিষয়ে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জুডিথ হাবার্ড জানান, প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে, সুপারশিয়ার ভূমিকম্পের কারণে ফাটল তৈরি হয়েছে। অস্বাভাবিক গতি ভূকম্পনকে আরও বাড়িয়েছে বলে মনে করা হয়। ফলে বিশাল এলাকাজুড়ে ক্ষতি হয়েছে।
বিজ্ঞানী ইয়েহুদা বেন-জিয়ন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় সুপারশিয়ার ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বেশি। এমন ধরনের হুমকি অনেক দিন ধরেই রয়েছে। আগামী কয়েক দশক ধরে ক্যালিফোর্নিয়ায় ৭ মাত্রার বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। সুপারশিয়ার ভূমিকম্প ফল্ট বরাবর তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী শক্তি প্রেরণ করে বলে অবকাঠামোর জন্য নতুন ঝুঁকি তৈরি করে।
