চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর ভিডিও তৈরির টুল সোরায় আধেয় বা কনটেন্ট মালিকদের নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়াতে যাচ্ছে। নতুন এ উদ্যোগের ফলে কপিরাইটধারীরা নির্ধারণ করতে পারবেন, তাঁদের চরিত্র বা সৃজনশীল উপাদান কীভাবে ব্যবহার করা যাবে। একই সঙ্গে যাঁরা নিজেদের কনটেন্ট ব্যবহারের অনুমতি দেবেন, তাঁদের সঙ্গে আয় ভাগাভাগির ব্যবস্থাও চালু করার পরিকল্পনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান শুক্রবার এক ব্লগপোস্টে বলেন, কনটেন্ট মালিকদের জন্য ‘আরও সূক্ষ্ম ও বিস্তারিত নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা’ চালু করা হবে। এর মাধ্যমে তারা চাইলে নিজেদের চরিত্র বা উপাদানের ব্যবহার পুরোপুরি সীমিত বা নিষিদ্ধ করতে পারবেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি কনটেন্টের প্রসার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বজুড়ে মেধাস্বত্ব ও নির্মাতাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক নিয়ে উদ্বেগও বেড়েছে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন উদ্ভাবন ও নির্মাতাদের ন্যায্য পাওনার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহেই ওপেনএআই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় সোরা অ্যাপ উন্মুক্ত করেছে। স্বতন্ত্র এই অ্যাপে ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ১০ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ভিডিও তৈরি ও শেয়ার করতে পারেন। প্রকাশের পর দ্রুতই অ্যাপটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কারণ, এতে ব্যবহারকারীরা কপিরাইটযুক্ত চরিত্র বা উপাদান ব্যবহার করে ভিডিও তৈরি করতে পারছেন এবং সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মতো ফিডে প্রকাশ করতে পারছেন।
তবে এই নীতি হলিউডে ইতিমধ্যে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ডিজনিসহ কিছু বড় স্টুডিও তাদের কনটেন্ট সোরা অ্যাপে ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্যাম অল্টম্যান জানান, ওপেনএআই শিগগিরই কপিরাইটধারীদের জন্য আয় ভাগাভাগির একটি কাঠামো চালু করবে। যাঁরা নিজেদের চরিত্র বা কনটেন্ট ব্যবহারের অনুমতি দেবেন, তাঁরা অ্যাপের আয়ের অংশ পাবেন। তিনি বলেন, ব্যবহারকারীরা অনেক বেশি ভিডিও তৈরি করছেন। বিশেষ করে ছোট বা নির্দিষ্ট দর্শকগোষ্ঠীর জন্য বেশি ভিডিও তৈরি করা হচ্ছে। তাই এখনই একটি টেকসই আয়কাঠামো তৈরি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। অল্টম্যান বলেন, এই আয় ভাগাভাগির মডেল বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লাগবে। প্রাথমিকভাবে সোরা অ্যাপে পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু করা হবে। এরপর ধীরে ধীরে ওপেনএআইয়ের অন্যান্য পণ্যেও তা সম্প্রসারিত হবে।
মাইক্রোসফট–সমর্থিত ওপেনএআই গত বছর সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য সোরা মডেল উন্মুক্ত করে। এর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি মাল্টিমডাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করে। বর্তমানে ওপেনএআই টেক্সট টু ভিডিও প্রযুক্তিতে মেটা ও অ্যালফাবেটের গুগলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সম্প্রতি মেটা ‘ভাইবস’ নামের একটি নতুন মাধ্যম উন্মোচন করেছে, যেখানে ব্যবহারকারীরা স্বল্পদৈর্ঘ্যের এআইনির্ভর ভিডিও তৈরি ও শেয়ার করতে পারেন।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস