‘বান্দরবান বোমাং রাজার কার্যালয়, ২০০ টাকার রাজার সনদ ৩০ হাজার’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তর-এ গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদন ঘিরে বান্দরবানে তীব্র জনমত সৃষ্টি হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় রাজার সনদ বাতিলসহ আট দফা দাবিতে আগামী ১৩ অক্টোবর সকাল–সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিসিপি) ও বান্দরবানের সর্বস্তরের নাগরিকরা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে বান্দরবানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে কাজী মজিবর রহমান বলেন, তিন পার্বত্য জেলায় আমরা বাঙালিরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার। এখানে জমি কিনতে, চাকরি পেতে কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে রাজার সনদ লাগে—এটা কি স্বাধীন বাংলাদেশের আইন? আমরা তো এই দেশেরই নাগরিক। ৬১ জেলায় এক আইন আর তিন জেলায় ভিন্ন আইন চলতে পারে না। সুতরাং রাজার সনদ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য এলাকায় বৈষম্য ও প্রশাসনিক অসামঞ্জস্য দূর করতে সংবিধানের আলোকে একক শাসনব্যবস্থা চালু করতে হবে। সংগঠনটি তাদের ৮ দফা দাবি তুলে ধরে জানায়—
পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ বাতিল করে সংবিধান অনুযায়ী তিন পার্বত্য জেলার প্রশাসন পরিচালনা করা।
রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ৬১ জেলার মতো ভূমি ক্রয়-বিক্রয় ও ভূমি ব্যবস্থাপনা চালু করা।
বাজার ফান্ড প্লটের লিজ মেয়াদ ৯৯ বছরে উন্নীত করা এবং বন্ধ থাকা ব্যাংক ঋণ পুনরায় চালু করা।
উন্নয়নের স্বার্থে পরিবেশবান্ধব ইটভাটা, কলকারখানা ও ইন্ডাস্ট্রি স্থাপন করা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রত্যাহার করা ২৪৬টি সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপন করা।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ধর্ষণ বন্ধ করে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও চাকরিতে বৈষম্য দূর করে সমান অধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
রাজার সনদ প্রথা বাতিল করে পার্বত্য এলাকায় নাগরিক অধিকার পুনর্বহাল করা।
সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান ছাড়াও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।