গত এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। মর্মান্তিক এ ঘটনার পর যুদ্ধ পরিস্থিতিতে চলে গিয়েছিল ভারত এবং পাকিস্তান। দুই দেশ একে অপরের ভূখণ্ডে হামলাও চালায়। শেষ পর্যন্ত এই সংঘাত থামলেও নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের কষ্ট কিংবা ক্ষোভ তো আর কমেনি।
সঞ্জয় দ্বিভেদী সেই স্বজনদেরই একজন। পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় তিনি ছেলেকে হারিয়েছেন। সঞ্জয় চান না, এশিয়া কাপে আগামীকাল পাকিস্তানের মুখোমুখি হোক ভারত। এই ম্যাচের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সঞ্জয় পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন ভারত সরকারকে। এর পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদে পূর্বের যে অবস্থান ছিল ভারতের, সে বিষয়েও ভারত সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেছেন সঞ্জয়।
ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআইকে সঞ্জয় বলেছেন, ‘২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল আমাদের দেশের ২৬ জন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে পাকিস্তান। ভারত সরকার বলেছিল, পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকবে না এবং রক্ত ও পানি কখনো একসঙ্গে প্রবাহিত হয় না। যেদিন থেকে আমি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের কথা শুনছি। শুধু আমি নই, পুরো দেশ এর (ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ) বিরোধিতা করছে। বলা হচ্ছে, পাকিস্তানের সঙ্গে খেলাধুলার ময়দান থেকে রাজনীতি—কোথাও কোনো সম্পর্ক থাকা উচিত নয়। আমি এটার (ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ) বিরুদ্ধে এবং জনতার আবেগকে মাথায় রেখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ভারত সরকারকে অনুরোধ জানাই।’
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে খেলাধুলার বিষয়ে ক্রীড়ানীতি হালনাগাদ করেছে। বহুজাতিক টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের সঙ্গে খেলতে পারবে ভারত, কিন্তু দ্বিপক্ষীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিতে পারবে না। ক্রিকেটে বেশ আগে থেকেই এই পথে হাঁটছে ভারত। এসিসি কিংবা আইসিসির টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় ভারত। কিন্তু দ্বিপক্ষীয় সিরিজে সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছে ২০১৩ সালে।
আরব আমিরাতে চলমান এশিয়া কাপে ভালো শুরু পেয়েছে ভারত। গত বুধবার দুবাইয়ে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে মাত্র ৫৭ রানে অলআউট করে ৯ উইকেটের জয় পায় সূর্যকুমারের দল। দুবাইয়েই আগামীকাল পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে ভারত। আবুধাবিতে ১৯ সেপ্টেম্বর ওমানের বিপক্ষে গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে ভারত। গতকাল ওমানকে ৯৩ রানে হারিয়ে পাকিস্তানও এশিয়া কাপে শুরুটা ভালো করেছে। গ্রুপ পর্ব ছাড়াও সুপার ফোরে ২১ সেপ্টেম্বর মুখোমুখি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের। কারণ, সুপার ফোরে সেদিনের সূচিতে মুখোমুখি হওয়ার কথা ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষ দুই দলের। আরব আমিরাত এবং ওমানের প্রতি পূর্ণ সম্মান বজায় রেখেই বলা যায়, ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেরা দুই দল হিসেবে ভারত ও পাকিস্তানেরই সুপার ফোরে ওঠার সম্ভাবনা বেশি। দুই দল ফাইনালে উঠলে তো কথাই নেই। এশিয়া কাপের মোড়কে তখন তিন ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান।