দলবদলের বাজারে বরাবরই কৃপণ হিসেবে পরিচিতি ছিল লিভারপুলের। গত মৌসুমের কথাই ধরা যাক। ২০২৪–২৫ মৌসুমে লিভারপুল দলবদলে খরচ করেছিল সাকল্যে ৪ কোটি ২০ লাখ ইউরো। তার আগের মৌসুমে অবশ্য তুলনামূলকভাবে বেশিই খরচ করেছিল তারা।
২০২৩–২৪ মৌসুমে লিভারপুলের খরচ ছিল ১৭ কোটি ২০ লাখ ইউরো, যা ছিল দলটির ইতিহাসে দলবদলে তৃতীয় সর্বোচ্চ খরচ। তবে চলতি দলবদলের আগে লিভারপুলের সবচেয়ে বেশি খরুচে মৌসুম ছিল ২০১৮–১৯ মৌসুম।
সেবার দলবদলে লিভারপুল খরচ করেছিল ১৯ কোটি ২২ লাখ ইউরো। লিভারপুলের এই খরচের খাতা অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর তুলনায় সামান্যই বলা যায়। যেমন ২০২৩–২৪ মৌসুমে লিভারপুল যেবার ১৭ কোটি ২০ লাখ ইউরো খরচ করেছিল, সেই দলবদলে চেলসির খরচ ছিল ৪৬ কোটি ৪১ লাখ ইউরো। দুই দলের খরচের পার্থক্যই বদলে দিচ্ছে খরচের খাতায় লিভারপুল কতটা পিছিয়ে; কিন্তু সেই লিভারপুলই এবার চমকে দিয়েছে সবাইকে। ডাচ কোচ আর্নে স্লট আসার পর প্রথম মৌসুমে তেমন খরচ না করলেও এবার লিভারপুল খরচ করছে দেদার। যার ফলে এরই মধ্যে তারা অতীতের সব রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে।
চলতি দলবদলে সর্বশেষ লিভারপুল দলে ভিড়িয়েছে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কুর্টের ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার হুগো একিতিকেকে। তাঁর পেছনে লিভারপুলের খরচ প্রায় ৯ কোটি ৫০ লাখ ইউরো। এর আগে লিভারপুল দলে ভিড়িয়েছে ফ্লোরিয়ান ভির্টৎস (১২ কোটি ৫০ লাখ ইউরো), মিলোজ কেরকেজ (৪কোটি ৬৯ লাখ ইউরো), জেরেমি ফ্রিমপং (৪ কোটি ইউরো), আরমিন পেচসি (১০ লাখ ৭৮ হাজার ইউরো)। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত লিভারপুলের খরচ প্রায় ৩০ কোটি ৮৬ লাখ ইউরো (২৯ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ড) বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ হাজার ৮৭৭কোটি টাকা।
লিভারপুলের এই খরচ চলতি মৌসুমে সব লিগ মিলিয়ে কোনো দলের সর্বোচ্চ তো বটেই, এমনকি ২০১৬ সালের পর প্রিমিয়ার লিগের কোনো ক্লাবের দলবদলে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খরচও বটে। শেষ পর্যন্ত শীর্ষে উঠতে না পারলেও খুব শিগগির এককভাবে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসার সুযোগ রয়েছে লিভারপুলের। দলবদলের দুয়ার বন্ধ হওয়ার আগে লিভারপুলের আরও খেলোয়াড় কেনার গুঞ্জন আছে। বিশেষ করে উচ্চমূল্য দিয়ে লিভারপুল নিউক্যাসল থেকে নিয়ে আসতে পারে আলেক্সান্দার ইসাককেও। এই গুঞ্জন যদি সত্যি হয় তবে লিভারপুল খরচের দিক থেকে নিশ্চিতভাবে আরও ওপরে উঠে আসবে এবং ভেঙে দিতে পারে আরও কিছু রেকর্ডও।
যেখানে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে ইউরোপের সর্বকালের সর্বোচ্চ খরচের খাতাতেও (যেখানে ৪৬ কোটি ৪১ লাখ ইউরো নিয়ে সবার ওপরে চেলসি)। এখন লিভারপুলের খরচের এই গাড়ি কোথায় গিয়ে থামে, সেটিই দেখার অপেক্ষা।