মহাকাশে শূন্য মাধ্যাকর্ষণে দীর্ঘ সময় থাকার ফলে মানবদেহে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়ে থাকে। আর তাই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ছয় মাস বা তার বেশি সময় থাকার ফলে নভোচারীরা দৃষ্টিসংক্রান্ত সমস্যায় পড়ছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। মহাকাশে মাসখানেক অবস্থানের পর নভোচারীদের দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে সম্প্রতি গবেষণা করেছে নাসা। নাসার তথ্যমতে, দীর্ঘদিন মহাকাশে থাকলে চোখের ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। নভোচারীদের দৃষ্টিশক্তির এই পরিবর্তনকে স্পেস–অ্যাসোসিয়েটেড নিউরো-অকুলার সিনড্রোম বা এসএএনএস বলা হয়। শূন্য মাধ্যাকর্ষণে চোখের তারল্যের কিছুটা পরিবর্তন হয় বলে এ সমস্যা তৈরি হয়।
নাসা জানিয়েছে, মহাকাশচারীরা যখন দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশে থাকেন, তখন তাঁদের দৃষ্টিশক্তিতে সূক্ষ্ম পরিবর্তন দেখা যায়। এর ফলে অনেক নভোচারীর হঠাৎ করে উচ্চশক্তিসম্পন্ন চশমার প্রয়োজন হয়। নভোচারীদের অপটিক ডিস্কে ফোলা ভাবের পাশাপাশি অক্ষিগোলকের আকৃতিরও পরিবর্তন হয়। এসব জটিলতার বড় কারণ হচ্ছে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অনুপস্থিতি। পৃথিবীতে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি মানুষের শরীরের তরলকে নিচের দিকে টেনে রাখে। কিন্তু শূন্য মাধ্যাকর্ষণের কারণে মহাকাশে রক্ত ও সেরিব্রোস্পাইনাল তরল মাথার দিকে সরে যেতে থাকে। এতে মাথার খুলিতে ও চোখের পেছনে চাপ বাড়ে। তখন সম্ভাব্য কাঠামোগত পরিবর্তন হয়। দৃষ্টিশক্তিসংক্রান্ত এই সংকট মোকাবিলা করার জন্য নাসা বর্তমানে ‘থাই কাফ’ নামের একটি পরীক্ষা চালাচ্ছে। শূন্য মাধ্যাকর্ষণের সমস্যা সমাধানে বর্তমানে মহাকাশচারীরা মহাকাশে অবস্থানের সময় শরীরের নিচের অংশের রক্ত আটকে রাখার জন্য উরুর চারপাশে আঁটসাঁট ব্যান্ড পরে থাকেন। এই ব্যান্ড শরীরে ঊর্ধ্বমুখী তরলের স্থানান্তর রোধ করে থাকে।