চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ একের পর এক ম্যাচ খেললেও দেখা যায়নি তাসকিন আহমেদকে। অবশেষে সাড়ে চার মাস পর বাংলাদেশের জার্সিতে ফিরলেন তিনি। ফেরার ম্যাচেই আগুন ঝরালেন ডানহাতি এ পেসার। উইকেট তুলে নিয়ে নানান ভঙ্গিতে উদ্যাপনও করেছেন তিনি। বুধবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামে নতুন অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের নেতৃত্বে। এই ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছে পারভেজ হোসেন ইমন ও তানভীর ইসলামের। দুই নতুনের অভিষেকের দিনে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন তাসকিন। ৫ উইকেট না পাওয়ার আক্ষেপ থাকলেও লঙ্কানদের বেশ চাপে রাখেন তিনি। ১০ ওভারে ৪৭ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। মেডেন ২ ওভার।
আরেক পেসার তানজিম হাসান সাকিবের শিকার ৩ উইকেট। ও হ্যাঁ ক্যারিয়ারের ৫০তম ওয়ানডেতে ঘূর্ণিবলে উইকেট পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্তও! তাতেই ৪ বল বাকি থাকতে ২৪৪ রানে অলআউট হয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা। বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৬.১ ওভারে ৩ উইকেটে ২৯ রানে পরিণত হয় স্বাগতিকরা। যাঁদের মধ্যে নিশান মাদুশকাকে (৬) বোল্ড করেছেন তাসকিন। আর কামিন্দু মেন্ডিসকে ফিরিয়ে তাসকিন হালকা একটু নেচেও নিলেন। ৪ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি কামিন্দু।
বিপর্যস্ত লঙ্কানদের হাল ধরতে পাঁচ নম্বরে নামেন আসালাঙ্কা। চতুর্থ উইকেটে মেন্ডিস-আসালাঙ্কা গড়েন ৭৭ বলে ৬০ রানের জুটি। ১৯তম ওভারের শেষ বলে মেন্ডিসকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার তানভীর। তিন নম্বরে নামা মেন্ডিস ৪৩ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় করেন ৪৫ রান। মেন্ডিসের বিদায়ে শ্রীলঙ্কার স্কোর হয়ে যায় ১৯ ওভারে ৪ উইকেটে ৮৯ রান। পঞ্চম উইকেটে এরপর জানিথ লিয়ানাগে ও আসালাঙ্কা গড়েন ৭৬ বলে ৬৪ রানের জুটি। ৩২তম ওভারের চতুর্থ বলে লিয়ানাগেকে (২৯) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন শান্ত। বাঁহাতে ব্যাট করলেও ডান হাতে অফস্পিন করা সাবেক অধিনায়ক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উইকেট পেলেন ২৬ মাস পর।
লঙ্কানরা এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। যেখানে ৪৬তম ওভারে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও মাহিশ তিকশানার উইকেট দুটি পেয়েছেন তাসকিন। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মধ্যে একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকেন আসালাঙ্কা। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে কখনো ধীরে, কখনো আক্রমণাত্মক খেলেছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ১১৭ বলে। ননস্ট্রাইক প্রান্তে ঠিকমতো বাংলাদেশি ফিল্ডার থ্রো করতে পারলে তো তিন অঙ্কই ছুঁতে পারতেন না এই বাঁহাতি ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ১২৩ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ১০৬ রান করেন লঙ্কান অধিনায়ক। ৭৪তম ওয়ানডেতে এটি তার পঞ্চম সেঞ্চুরি। ৪৯.২ ওভারে শ্রীলঙ্কা অলআউট হয় ২৪৪ রানে। তাসকিনের পর ম্যাচের বাংলাদেশের দ্বিতীয়সেরা বোলিং করেছেন তানজিম সাকিব।
৯.২ ওভারে ৪৬ রানে ডানহাতি এ পেসার নিয়েছেন ৩ উইকেট। বাংলাদেশের ৩২তম ওয়ানডে ক্রিকেটার হিসেবে ৫০ তম ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন শান্ত। তার আগে বাংলাদেশের হয়ে ৩১ ক্রিকেটার ৫০ বা তার বেশি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। দেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি ২৭৪ ম্যাচ খেলেছেন মুশফিকুর রহিম।