‘কাঁটা লাগা’ গানে ঝড় তোলা অভিনেত্রী শেফালি জারিওয়ালার আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া বলিউডে। গত ২৭ জুন রাতে মুম্বাইয়ের অন্ধেরির নিজ বাসায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার (২৯ জুন) মুম্বাইয়ে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুর আগের দিন শেফালির বাসায় সত্যনারায়ণ পূজা অনুষ্ঠিত হয় এবং তিনি উপবাস পালন করছিলেন। ওই অবস্থায় তিনি অ্যান্টি-এইজিং ওষুধ, মাল্টিভিটামিন, কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট ও গ্লুটাথায়োন ইনজেকশন গ্রহণ করেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, উপবাস ও ওষুধের সমন্বয়ে তাঁর রক্তচাপ হঠাৎ কমে গিয়ে হৃদ্রোগ (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) হয়।
ঘটনার সময়রেখা: কীভাবে ঘটল মৃত্যু?
২৭ জুন: শেফালি জারিওয়ালা সত্যনারায়ণ পূজার আয়োজন করেন ও উপবাসে ছিলেন। একইদিন অ্যান্টি-এইজিং মেডিকেশন এবং গ্লুটাথায়োন ইনজেকশন নেন।
রাত ১০:৩০: আচমকা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। শরীরে কাঁপুনি দেখা যায়।
রাত ১০:৪৫–১১টা: দ্রুত বেলভিউ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে ‘ব্রট ডেড’ ঘোষণা করা হয়। পরে মরদেহ কুপার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
রাত ১১:১৫–১১:৩০: আম্বোলি থানাকে জানানো হয়।
রাত ১১:৪৫: পুলিশ কুপার হাসপাতালে পৌঁছায়।
২৮ জুন: সরকার নিযুক্ত চিকিৎসকদের একটি দল ময়নাতদন্ত করে এবং ভিডিও রেকর্ড করে।
শেফালির ভিসেরা সংরক্ষণ করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য কালীনা ল্যাবে পাঠানো হয়। ফল পেতে ৫০–৯০ দিন লাগতে পারে।
কী ছিল শেফালির শরীরে?
ফরেনসিক টিম তাঁর বাসা থেকে গ্লুটাথায়োনের ভায়াল, অ্যান্টি-এইজিং মেডিকেশন ও অন্যান্য সাপ্লিমেন্ট উদ্ধার করেছে। কাপড়চোপড়, বিছানার চাদর, গদি সবকিছুরই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
পুলিশ কী বলছে?
এখন পর্যন্ত পুলিশ শেফালির স্বামী পরাগ ত্যাগীসহ ১৪ জনের জবানবন্দি গ্রহণ করেছে। কেউই কোনো সন্দেহজনক বিষয় জানাননি। তাই প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু হিসেবেই নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত ও রাসায়নিক পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাবে।
গ্লুটাথায়োন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
ত্বক উজ্জ্বল করতে ব্যবহৃত গ্লুটাথায়োন ইনজেকশন ইদানীং অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে সেলিব্রিটিদের মধ্যে। তবে চিকিৎসকরা বারবার সতর্ক করছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এসব ইনজেকশন সেবন বিপজ্জনক হতে পারে।
শেফালির আকস্মিক মৃত্যু একটিবারের জন্য বলিউডের গ্ল্যামার জগতের অন্ধকার দিক তুলে ধরেছে। রূপের মোহে ছুটতে গিয়ে জীবনকে কতটা ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন অনেকে — উঠছে এমন প্রশ্ন।