বিশ্বের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মঙ্গলবার (২৪ জুন) অশ্রাব্য শব্দ ব্যবহার স্পষ্ট করে দিয়েছেন ইরান ও ইসরায়েল দ্বন্দ্বে তিনি কতটা হতাশ ও বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। এমন মন্তব্য করেছেন সংবাদমাধ্যম বিবিসির ওয়াশিংটন ডিসির প্রতিনিধি বার্ন্ড ডেবুসমান জুনিয়র। তিনি বলেন, ‘আমি প্রায় প্রতিদিনই হোয়াইট হাউসে যাই— প্রেস পুলের সদস্য হিসেবে কিংবা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরসঙ্গী হিসেবে। তবে মঙ্গলবার সকাল যেটা দেখলাম, এমন ভাষা প্রকাশ্যে ট্রাম্পের মুখে খুব কমই শুনেছি – বলা চলে, প্রায় কখনোই করেন না।
ট্রাম্প সাধারণত তার তীব্র রাগ ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এর পোস্টে উগড়ে দেন। জনসমক্ষে নিজেকে তিনি একজন ঠান্ডা মাথার, হিসাবি ‘ডিলমেকার’ হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করেন।
মাঝে মধ্যে মিডিয়ার সামনে ক্ষেপে গেলেও সেটা সাধারণত কোনো রিপোর্টারের ‘বোকা’ বা ‘উন্মাদ’ ধরনের প্রশ্নের জবাবে হয়। কিন্তু হোয়াইট হাউজের সাউথ লনে, বিশ্বের ক্যামেরার সামনে ট্রাম্পের আজকের অশ্রাব্য শব্দ ব্যবহারের ঘটনা দেখিয়ে দিচ্ছে, ইরান ও ইসরায়েল- দুই শিবিরের দ্বন্ধে তিনি কতটা হতাশ ও বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। আপাতত ইসরায়েলই যেন তার রাগের বড় অংশের শিকার।
ট্রাম্প বহুবারই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি গাজা এবং ইউক্রেনসহ সব যুদ্ধ থামাবেন। সম্প্রতি তিনি দাবি করেছেন, রুয়ান্ডা ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, আর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার সংঘর্ষও তার কূটনৈতিক দক্ষতায় থেমেছে। যদিও এই বিষয়গুলো বেশির ভাগ আমেরিকানদের চিন্তার কেন্দ্রে ছিল না।
হোয়াইট হাউজ প্রশাসনের চোখে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি হতে যাচ্ছিল (বা যাচ্ছে) ট্রাম্পের বিদেশনীতিতে জয়ের মুকুটমণি। বিশেষ করে যদি এর সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করার কৃতিত্বও যুক্ত করা যেত, যা যুক্তরাষ্ট্রের বোমার আঘাতে সম্ভব হয়েছে বলে অভ্যন্তরীণভাবে প্রচার হচ্ছে।
গত রাতেই হোয়াইট হাউজের অনেকেই ট্রাম্পের এই ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা’কে বড় অর্জন হিসেবে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। কিন্তু বাস্তবে তা পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে না দেখে এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রকাশ্যেই বিরক্ত ও অস্বস্তিতে পড়েছেন।