যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর কাছে আনুষ্ঠানিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে তেহরান। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এসএনএন জানিয়েছে, দেশটির পারমাণবিক সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি’র কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই দাবি জানান। তিনি গ্রোসি’র ‘নিষ্ক্রিয়তা ও মদত’ এর কঠোর সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার নিন্দা জানাতে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানান। খবর আলজাজিরার।
চিঠিতে মোহাম্মদ ইসলামি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘এই চিঠি আন্তর্জাতিক আইন ও বিধিবিধান, বিশেষ করে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) চরম লঙ্ঘন, যা বিরুদ্ধে ইরানের প্রতিবাদ জানাচ্ছে।’ ইরান জানায়, তারা বিষয়টি নিয়ে উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ নেবে।
এদিকে আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি আগেই জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার প্রেক্ষিতে সংস্থাটির ৩৫ সদস্য রাষ্ট্রের পরিচালনা বোর্ডের একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।
এদিকে, ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর দুই দফায় ২৭টি ক্ষেপণাস্ত্র মার্কিনঘনিষ্ঠ ইসরায়েলে ছুঁড়েছে তেহরান। প্রথম দফায় ২২টি এবং দ্বিতীয় দফায় পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। দুই দফার হামলার মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল আধা ঘণ্টারও কম। আর এমন প্রেক্ষাপটে নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। এমনটি জানিয়েছে
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। হামলার লক্ষ্যবস্তু এলাকাগুলি ছিল ব্যাপক- এর মধ্যে রয়েছে অধিকৃত সিরিয়ার গোলান মালভূমি, আপার গালিলি অঞ্চল, উত্তর ও মধ্য উপকূলীয় অঞ্চল। মোট ১০টি স্থানে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র বা বড় আকারের শার্পনেল আঘাত হেনেছে এবং এসব স্থানে বিশেষ করে তেল আবিব ও হাইফায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। তবে কোন ধরনের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ইসরায়েলি জরুরি চিকিৎসা সেবার প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, এ হামলায় অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। চিকিৎসাকর্মীরা এখনও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছেন যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে সব আহতকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এত কাছাকাছি সময়ের ব্যবধানে দুই দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এই প্রথম দেখা গেল। সাধারণত একেক দফার মধ্যে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধান থাকে, কিন্তু এবার দুটির ব্যবধান ছিল আধা ঘণ্টারও কম।