লস অ্যাঞ্জেলেসে চলমান দাবানলের পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ। শুষ্ক আবহাওয়া এবং তীব্র তাপমাত্রার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে দমকল বাহিনী। যদিও বাতাসের গতিবেগ কিছুটা কমেছে, তবে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এখনও রয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এই দাবানলে প্রায় ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
দুইটি বড় দাবানল, প্যালিসেডস ফায়ার এবং ইটন ফায়ার, এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল সংস্থা ক্যাল ফায়ার সূত্রে জানা গেছে, প্যালিসেডস ফায়ার ইতোমধ্যেই প্রায় ৬,৯৭৪ হেক্টর এবং ইটন ফায়ার প্রায় ৫,৫৪০ হেক্টর জমি পুড়িয়ে ফেলেছে।
আগুনের কারণে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক হিসাবে, প্রায় ৫ জন নিহত এবং ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির শেরিফ রবার্ট লুনা জানান, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
দাবানলের কারণে লস অ্যাঞ্জেলেস এলাকায় প্রায় ১,৮০,০০০ মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ, যার মধ্যে শুধুমাত্র লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টিতেই ৯,৫৭,৭০০ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা অনুযায়ী, এই দাবানলে প্রায় ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে। পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপনের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন হবে।
দাবানলের ভয়াবহতা বিবেচনায় নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কংগ্রেসকে “আরও পদক্ষেপ” নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আগামী ১৮০ দিনের জন্য অগ্নিনির্বাপণ ও পুনরুদ্ধারের সমস্ত ব্যায় ফেডারেল সরকার বহন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি ও অগ্নিকাণ্ডপ্রবণ এলাকা থেকে বীমা সংস্থাগুলোর সরে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়ে জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
দাবানলে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধারে উদ্ধারকারী দলগুলো দিনরাত কাজ করছে। এছাড়া, হার্স্ট ফায়ার এবং লিডিয়া ফায়ার নামে আরও দুটি দাবানল কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে। তবে পরিস্থিতি এখনও পরিবর্তনশীল, এবং কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল শুধু স্থানীয় নয়, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সংকটকেও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। আগামী দিনে এ ধরনের দুর্যোগ এড়াতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।