নিজস্ব প্রতিবেদক::
চাহিদা মতো ঘুষ না দেওয়ায় মনগড়া ভিত্তিহীন প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজার সিআইডি অফিসের পুলিশ পরিদর্শক সামছুল আলমের বিরুদ্ধে। তিনি কোন বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব পেলে দুপক্ষ থেকে মোটা অংক দাবী করে। যে পক্ষ টাকা দিতে পারে না তাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়ে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের।
রত্নাপালং ইউনিয়নের বাসিন্দা সুমন বড়ুয়া নামে এক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, আমাদের পূর্ব পুরুষ অখিল চন্দ্র বড়ুয়া মরণে তার নামীয় আরএস খতিয়ান মূলে তার ৩ ছেলে নিকুঞ্জ বড়ুয়া, বিপিন চন্দ্র বড়ুয়া, নির্মল চন্দ্র বড়ুয়া’র অবিক্রীত অংশের বিএস ভুল লিপি হয়। আমরা বৈধ ওয়ারিশগণের নামে তা সংশোধনের জন্য যুগ্ম জেলা জজ (২য়) আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। যার নং-১৩৫/২০২৩।
উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আমাদের পক্ষে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা না মেনে গত ০২/০১/২০২৪ইং তারিখ ভোর রাতে কোটবাজার এলাকার মৃত ক্ষিরোদ চন্দ্র বড়ুয়ার ছেলে বোধিরত্ন বড়ুয়া নামে এক ব্যক্তি সংঘবদ্ধ লোকজন নিয়ে উখিয়ার কোটবাজারে রাতের আধারে দোকান করার জন্য বিরোধীয় রত্নাপালং মৌজার আরএস দাগ ৮৪, বিএস ১২৬ জমি উপর কন্টেইনার বসিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে । এছাড়াও আরএস দাগ ৮৬, বিএস ১২৮ দাগের জমি বিনা দলিলে জবর দখল করে নেয়।
খবর পেয়ে, জরুরী সেবা ৯৯৯ কল করে পুলিশী সহায়তায় তালা লাগিয়ে দেয়া হয় এবং জিডি মূলে প্রসিকিউশন দেয়।
কিন্তু জালিয়াত চক্রের হোতা মামলাবাজ বোধিরত্ন বড়ুয়া পরবর্তীতে উল্টো আমাদের পরিবারের কয়েকজন সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবি এবং ৩ জন রোগীসহ ১২ জন সদস্যের নামে বিভিন্ন ধারায় আদালতে অভিযোগ করে হয়রানি শুরু করেছে।
এ নিয়ে বিজ্ঞ আদালত সিআইডিকে তদন্ত দিলে অফিসার শামসুল আলম বিরোধীয় দাগ, খতিয়ান, সীট, অংশীদার বিশ্লেষণ না করে, পূর্ববর্তি কার্যক্রম পর্যালোচনা না করে, বিশেষজ্ঞের মতামত না নিয়ে, দালিলিক, পারিপার্শ্বিক এবং প্রযুক্তিগত সাক্ষ্য না নিয়ে বোধিরত্নের কাছ থেকে মোটা অংকের বিনিময়ে মনগড়া একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। কারণ তার দাবীকৃত ১ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে পারিনি বলে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা রিপোর্ট দেয়।
সিআইডি সামছুর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছেন, উখিয়া জাদিমুরা এলাকার রুবেল নামে এক ঠিকাদার।
তিনি বলেছেন, এক কথায় সিআইডি শামছুল আলম একজন বড় দূর্ণীতিবাজ অফিসার। সে কোন তদন্তের দায়িত্ব পেলে সে দুই পক্ষ থেকে মোটা অংক দাবী করে। যে পক্ষ টাকা দেয় তার পক্ষেই সে রিপোর্ট দেন। অন্যথায় বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়ে মানুষকে হয়রানি করে।
হয়রানির শিকার বিপ্লব বড়ুয়া একজন বলেন, আমার পিতা সুবর্ণ বড়ুয়া দুই চাচা সুনিল বড়ুয়া ও মিন্টু বড়ুয়া তিনজন প্যারালাইজড রোগী হলেও সবার নামে মিথ্যা ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ করে মামলাবাজ বোধিরত্ন বড়ুয়া।
এই অভিযোগে মিথ্যা ভিত্তিহীন রিপোর্ট দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে সিআইডি শামছুল আলম। আমি এই প্রতিবেদন প্রত্যাহার সহ পুনরায় অধিকতর নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতিসহ ন্যায় বিচারের প্রার্থনা জানাচ্ছি।
একই দাবী করেন পলাশ বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, মিকু বড়ুয়া, শিলু বিকাশ বড়ুয়া, মিলন বড়ুয়া, রুপন বড়ুয়া ও অনিক বড়ুয়া জীশুর।
রাজাপালং এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে জাফর আলম কন্ট্রাক্টর বলেন, জাল-জালিয়াতের মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের জমি আত্মসাতের পায়তারা করছে মামলাবাজ বোধিরত্ন বড়ুয়া। সে তার পিতার নামে ১০/০৪/১৯৪২ সালে ১২৭৮ নং একটি জাল দলিল সৃজন করে। এ ব্যাপারে আমি চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চ্যালেঞ্জ করলে দলিলটি মিয়া মিস্ত্রির নামে ভিন্ন এক ব্যক্তির নামে রেজিস্টার-চট্টগ্রাম এর নামে প্রতিবেদনে প্রকাশ পায়।
ভুক্তভোগী পলাশ বড়ুয়া তার টাইমলাইনে লিখেছেন, দূর্নীতিগ্রস্থ এ ধরণের মানুষের কারণে দেশে কখনো অনিয়ম, দূর্নীতি বন্ধ হবে না! বলছি সিআইডি অফিসার শামছুল আলমের কথা। এদের কারণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থা গুলোর ভাবমূর্তি আরো ক্ষুন্ন হবে।
তাই দূর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তার প্রতিবেদন বাতিলসহ অধিকতর নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী জানাচ্ছি। অন্যথায় নিয়মে পরিণত হবে অনিয়ম।
বিষয়টি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী করেছেন, কোটবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বাবুলসহ অনেকে।
এ ব্যাপারে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক শামছুল আলম তড়িগড়ি করে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
তবে কক্সবাজার জেলা সিআইডির পুলিশ সুপার শাহেদ মিয়া জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। এই অফিসে দূর্ণীতিবাজদের জায়গা নেই।