তরুণ প্রজন্ম, সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতার আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে সফল হতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, উদার, গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া আমাদের লক্ষ্য। আমরা এক পরিবার। কোনো ভেদাভেদ যেন আমাদের স্বপ্নকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করতে না পারে।
দেশের সংকটকালে ছাত্রদের আহ্বানে সরকারে আসার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জ গ্রহণে প্রস্তুত। সরকারের পক্ষ থেকে আজ আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করতে আপনাদের সামনে এসেছি। সবাইকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘এখনই সব দাবি পূরণের জন্য জোর করা, প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ব্যক্তিবিশেষকে হুমকির মুখে ফেলা, মামলা গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করা, বিচারের জন্য গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে আদালতে হামলা করে আগেই একধরনের বিচার করে ফেলার যে প্রবণতা, তা থেকে বের হতে হবে।’
এই প্রবণতা থেকে বের হতে না পারলে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের গৌরব ও সম্ভাবনা ম্লান হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নড়বড়ে কাঠামো, আমি বলব জনস্বার্থের বিপরীতে গঠিত এক কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের দেশ সংস্কারের কাজে হাত দিতে হয়েছে। রাতারাতি এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কঠিন। আমরা এখান থেকেই বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই, যেন এদেশে জনগণই সব ক্ষমতার উৎস হয়। বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে একটি মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত হয়।
নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে ড. ইউনূস বলেন, আমরা সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকেও সংস্কার করব। কমিশনকে যেকোনো সময় আদর্শ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রাখব। তিনি বলেন, দেশের সংকটকালে ছাত্রদের আহ্বানে আমরা সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। নির্বাচন কখন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের আপামর জনসাধারণ আমাদের নিয়োগ সমর্থন করেছে। আমরা ক্রমাগত সবাইকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে যাবো যাতে হঠাৎ করে এই প্রশ্ন উত্থাপিত না হয় যে, আমরা কখন যাব। তারা (জনগণ) যখন বলবে আমরা চলে যাব।