বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছেন। বঙ্গভবনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়া হয়েছে। আর ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং অন্যান্য মামলায় আটক ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকে মুক্তিও পেয়েছেন।
এর আগে সোমবার (৫ আগস্ট) বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি। বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তির সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টির জি এম কাদের, মজিবুল হক চুন্নু ও আনিসুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, হেফাজত ইসলামের মামুনুল হক, মুফতি মনির কাসেমী ও মাহাবুবুর রহমান, জামায়াতে ইসলামের ড. শফিকুর রহমান ও শেখ মো. মাসুদ, মেজর জেনারেল ফজলে রাব্বি (অব.), জাকের পার্টির শামিম হায়দার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা জালাল উদ্দীন আহমদ, গণসংহতি আন্দোলনের জুনায়েদ সাকী, জাকের পার্টির শামিম হায়দার, গণ-অধিকার পরিষদের অ্যাডভোকেট গোলাম সারওয়ার জুয়েল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, ফিরোজ আহমদ এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল হোসাইন, আরিফ তালুকদার, ওমর ফারুক, মোবাশ্বেরা করিম মিমি ও ইঞ্জিনিয়ার মো. আনিছুর রহমান।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি ঘিরে রোববার ঢাকাসহ সারাদেশে সরকার সমর্থিত নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ জন ছাড়াও কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে পৃথক হামলায় হাইওয়ে থানার এক পুলিশসহ মোট ১৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাইয়ের প্রথম থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় গত ১৫ জুলাই রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধে গুলি চালায় পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের হামলায় কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ ও আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। পরে দেশের দায়িত্ব সেনাবাহিনী বুঝে নেয়।