রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তৃতীয় দফার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সবার চোখ এখন ৯০ উপজেলার নির্বাচনের দিকে। কাকে ভোট দেবেন শেষ সময়ে এসে হিসাব-নিকাশ করছেন ভোটাররা। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।
নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইতোমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এ উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।
তৃতীয় ধাপের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা সোমবার (২৮ মে) মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। এই ধাপে ১০৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ১৯টি উপজেলার ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
মোমবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে এই ধাপের প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা পূর্বেই সবধরণের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকে। বুধবার (২৯ মে) তৃতীয় ধাপের ৯০ উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন উপলক্ষ্যে ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিবসের পূর্ববর্তী মধ্যরাত অর্থাৎ ২৮ মে দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ২৯ মে দিবাগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
এসব উপজেলায় তিন দিনের জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে সোমবার মধ্যরাত থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে।
ভোটের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠে নামানো হয়েছে বিজিবি, পুলিশসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচন অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ পরিচালনায় মাঠে রয়েছেন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও আচরণবিধি প্রতিপালনে নিয়োজিত করা হয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভিজিল্যান্স টিম ও অবজারভেশন টিম, মনিটরিং টিম ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন এবং উক্ত টিমসমূহের কার্যক্রম নির্ধারিত তিন দিন পর বা ক্ষেত্রমতো তাৎক্ষণিক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবহিত করতে হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা টিমসমূহ কর্তৃক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবগত করানোর জন্য নির্দেশনা দেবেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাচনের সামগ্রিক কার্যক্রম শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকল্পে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ১৯ উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়েছে।তৃতীয় ধাপের ১০৯টি উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবের কারণে মোট ১৯টি উপজেলার ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সচিব এই তথ্য জানান।
নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, আগামী ২৯ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের ১০৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণের কথা ছিল। এ উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাই নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যা থেকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হেনেছে।
মো. জাহাংগীর আলম বলেন, যেসব নির্বাচনি এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের পানি প্রবেশ করেছে, বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করেছে, কোথাও কোথাও গাছ উপড়ে পড়েছে, কোথাও বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে, এসব বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন মোট ১৯টি উপজেলার ভোটগ্রহণ আপাতত স্থগিত করেছে।
উপজেলাগুলো হলো বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, খুলনা জেলার কয়রা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, পটুয়াখালী সদর, দুমকী, মির্জাগঞ্জ, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, ভোলার তজুমদ্দিন, লালমোহন, ঝালকাঠির রাজাপুর, কাঠালিয়া, বরগুনার বামনা, পাথরঘাটা এবং রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি।