হেল্থ ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: চীনের উহান থেকে বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরা ৩১৪ জনের মধ্যে ৭ বাংলাদেশিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাদের সেখানে নেয়া হয়। এই ফ্লাইটে ৩১৬ জনের ফেরার কথা থাকলেও শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় দুজনকে উহানেই রেখে আসা হয়। এদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা নার্সের শরীরে জ্বর থাকায় করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। রোগী কিনা সেটি নিশ্চিত না হলেও যেহেতু বিষয়টি স্পর্শকাতর তাই নার্সসহ দেশে ফেরা সবাই সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে রাখা হয়েছে।
ডিসেম্বরে উহানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর জানুয়ারির মাঝামাঝিতে এটি মহামারী আকার ধারণ করে। ওই সময়ে উহান শহরে প্রবেশ ও বের হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির সরকার। এই অবস্থায় খাদ্য সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সহায়তার আবেদন জানালে উদ্যোগ নেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের দেশে ফেরাতে আলোচনা শুরু হয় চীন সরকারের সঙ্গে।
তাদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে চীনের অনুমতি পাওয়ার পরপরই ঘোষণা দেয়া হয় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। তখন উহানে অবস্থানরতদের থেকে দেশে ফিরতে ইচ্ছুকদের জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু করে চীনে বাংলাদেশ হাইকমিশন। সর্বশেষ ৩১৬ জন দেশে ফিরে আসবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়।
তাদের ফিরিয়ে আনতে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) উহান যায় বিমানের ফ্লাইট। রাতেই তাদের নিয়ে যাত্রা করার কথা থাকলেও স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও অভিবাসন সংক্রান্ত নানা জটিলতায় শনিবার চীনের স্থানীয় সময় সকালে ফ্লাইটটি বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা করে। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, দেশে ফেরার পর তাদের ১৪ দিন আশকোনার হাজী ক্যাম্পে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কিন্তু বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর আরও সাতজনের শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় তাদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। কারণ, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক উপসর্গগুলোর মধ্যে অন্যতম শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রির বেশি হওয়া।
এর আগেও একাধিক বাংলাদেশিকে পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সম্প্রতি চীন সফর করেছেন এমন বিদেশি নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির সরকার। এছাড়া এই আতঙ্কেই বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
চীন সরকারের নানা পদক্ষেপের পরও দেশটিতে হু হু করে বেড়েই চলছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। জানুয়ারির শেষ দিন পর্যন্ত এই ভাইরাসের সংক্রমণে চীনেই মারা গেছেন ২৫৯ জন। অন্যদিকে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৭৯১ জন। বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ১১ হাজার ৯৪৩ জন। সূত্র : সময় টিভি