বিনোদন ডেস্ক
” দেশ ভাগ হয়, গান ভাগ হয় না। গানের কোনো জাতপাত নেই। / মানুষই শেষ কথা। মানুষের জয় হোক। মানবতার জয় হোক। /বাংলা গানের জয় হোক। জীবন সুন্দর, আনন্দম।”- কথাগুলো বলেছিলেন, মহীতোষ তালুকদার তাপস। যিনি একজন গান পাগল মানুষ। গানই তার ধর্ম, গানই তার পরিচয়। গানের সুরে সুরেই বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্রকে এক সুতোয় বেঁধেছেন এই আত্মভোলা মানুষটি। যার কল্যাণে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের টাইম স্কয়ারে প্রথমবার বাংলা নববর্ষ পালিত হয়েছিল। সম্প্রতি আমেরিকা নিবাসী এই বাংলা গানের সাধক কলকাতাতেও বাংলা গানের আসর বসিয়েছিলেন।
সম্প্রীতি কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসেছেন মহীতোষ তালুকদার তাপস। তার বহু গানের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় হামেশাই ভাইরাল হয়। ভাষা মাসের শুরুতে শতকণ্ঠে বাংলা গানের অনুষ্ঠানের যোগ দেন তিনি।
বাংলা গান এবং সংস্কৃতির টানে, সেটার আরও বেশি প্রচারের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কলকাতায় ছুটে এসেছেন বহু বাঙালিরা। শহর তো বটেই, বাংলার বিভিন্ন জায়গায় তারা অনুষ্ঠান করছেন, ঘটাচ্ছেন ‘সুরবন্ধন’, সে যেন এক আনন্দ-সুরের মহাযজ্ঞ। আর সবটা ঘটছে যার নেতৃত্বে তিনি হলেন মহীতোষ তালুকদার তাপস। ‘ভাষা’ মাসের প্রথমদিনই তাদের একটি অনুষ্ঠান ছিল।
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলায় এক সাক্ষাৎকারে মহীতোষ তালুকদার তাপস বলেন, আমার যখন ৭ বছর বয়স তখন থেকেই। প্রথমে বাংলাদেশেই গান শিখতাম। এরপর ১১ বছর বয়সে সুইডেন যাই গানের জন্য। সেখানেই প্রথমবার মঞ্চে উঠি। গানটা আমার রক্তের মধ্যে, বুকের মধ্যে। ভাবনাটা সবসময়ই ছিল। আর সেটার জন্য দেশ বিদেশ বলে আলাদা করে কিছু হয় না। সবটাই বাংলা ভাষার জন্য। কলকাতায় এমন বহু মানুষ আছেন যাঁরা বাংলা বলেন না। আবার ওই দেশে বসেও আমার ছেলে যার পনের বছর বয়স সে দরকার না হলে ইংরেজি বলে না। দেশপ্রেম, ভাষাপ্রেমের সঙ্গে কোথায় আছি সেটার কোনও যোগ নেই।
সাক্ষাৎকারে তাপস আরও বলেন, ৩২ বছর আমি আমেরিকায় আছি। জানেন, কলকাতা খুব সম্ভবত ১৯৯৩ সাল থেকে কবীর সুমনের তোমাকে চাই গানটি বাজাতে শুরু করে। আমি ১৯৯১ সালেই ঢাকায় বসেই গানটি গেয়েছিলাম। ফলে গান নিয়েই আমার সময় কাটে।
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে আরও বলেন, এখানে আসার ৪ মাস আগে আমি ফেসবুকের পাতায় একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে ৮০০ জনের বেশি মানুষ সাড়া দিয়েছিল। অবশেষে বইমেলার অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ৩৫০ জনের মতো মানুষ। এরআগে আমরা ৪ দিন রিহার্সাল করেছি কলকাতায়। গত বছরের মতো এবারও নিউ ইয়র্কের টাইম স্কয়ারে প্রথমবার বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানে শত কণ্ঠে বাংলা গান হবে। আমি এখান থেকে ফিরে এক সপ্তাহ বিশ্রাম নেব। তারপর ওটার রিহার্সাল শুরু করব, যদি মায়ের শরীর ঠিক থাকে।