সারাদেশে আজ সোমবার শুরু হচ্ছে বই উৎসব। এ উৎসবের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা হাতে পাবে নতুন বই। তবে অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরতে হবে কিছুটা অপূর্ণতাকে সঙ্গী করে। কেননা দেশের অনেক উপজেলায় এই দুই শ্রেণির সব বই পৌঁছেনি।
আজ সোমবার দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধির বাধ্যবাধকতায় এ উৎসবে উপস্থিত থাকছেন না মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা। এবার বই উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিকের বই উৎসব হবে মিরপুরের ন্যাশনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই মন্ত্রী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় মাধ্যমিক স্তরে বই উৎসব হবে না।
গতকাল রবিবার বছরের শেষ দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে বই উৎসবের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।
দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ২০১০ সাল থেকে বিনামূল্যে নতুন বই দিয়ে আসছে সরকার। তবে প্রতিবারই অভিযোগ ওঠে নি¤œমানের বই সরবরাহের। এবারো এর ব্যতিক্রম হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আগামী বছরের জন্য প্রাথমিকে ৯ কোটি ৩৮ লাখের বেশি এবং মাধ্যমিক স্তরে সাড়ে ২১ কোটির বেশি বই ছাপানো হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানায়, অষ্টম ও নবম শ্রেণির ৩টি বই ছাপানোর কাজ এখনো শেষ হয়নি। এমনকি ছাপা হলেও পরিবহন সংক্রান্ত জটিলতায় বেশ কিছু উপজেলায় এ দুই শ্রেণির সব বই পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন বইয়ের চাহিদা ছিল ৩ লাখ ৮১ হাজার ৫০০টি এবং বই এসেছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৯০০টি। বাকি রয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৬০০টি। এর মধ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই শতভাগ এলেও অষ্টম শ্রেণিতে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক ও নবম শ্রেণিতে এখনো কোনো বই আসেনি।
এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ফিরোজ আহমেদ বলেন, নতুন পাঠ্যক্রম হওয়ায় চাহিদার তুলনায় কিছু বই এখনো ঘাটতি রয়েছে। তবে অধিকাংশ শ্রেণির বই আমরা বিদ্যালয়গুলোয় পাঠিয়ে দিয়েছি। সেসব বিদ্যালয়ে আজ বই বিতরণ করা হবে।
একই অবস্থা হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায়ও। উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, রবিবার দুপুর পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণির ৭ বিষয়ের বই এসেছে। আর নবম শ্রেণির একটি বইও আসেনি। অন্যান্য শ্রেণির সব বই এসেছে।
সারাদেশের তথ্য বলছে, শুধু এ দুই উপজেলায় নয়, দেশের অধিকাংশ উপজেলায় অষ্টম ও নবম শ্রেণির সব বই পৌঁছেনি। কোনো কোনো উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির ৬ থেকে ৭টি বিষয়ের বই পৌঁছেছে। আর অনেক উপজেলায় নবম শ্রেণির কোনো বই-ই পৌঁছেনি।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, প্রাক্-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণির সব বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। অষ্টম ও নবম শ্রেণির কিছু বই বাকি থাকতে পারে। এ দুই শ্রেণিতে হয়তো শিক্ষার্থীরা বইয়ের পুরো সেট পাবে না। আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ দুই শ্রেণির বইও শিক্ষার্থীরা হাতে পাবে।
বই উৎসব আজ
আজনিউজ২৪ :
0 Views