রাঙ্গুনিয়ার ব্যাপক উন্নয়ন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি সব সময় এলাকার মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। সরকারের মন্ত্রী ও দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমি প্রতি সপ্তাহে চট্টগ্রাম ও রাঙ্গুনিয়ায় যাই। কেউ স্বীকার করুক না-করুক, গত সাড়ে ১৪ বছরে রাঙ্গুনিয়ায় এমন কোনও স্কুল-কলেজ ও আলিয়া মাদরাসা নেই, যেখানে নতুন ভবন হয়নি। এমন কোনও বেসরকারি মাদরাসা, মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা নেই, বরাদ্দ পায়নি। নতুনভাবে ২৮টি মসজিদ নির্মিত হয়েছে। আগেও অনেকে রাঙ্গুনিয়া থেকে এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। তারা কতটুকু করতে পেরেছেন, আপনারাই ভালো জানেন।’
রাঙ্গুনিয়ার মানুষের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করছেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক হাজার ছেলে-মেয়ের চাকরি হয়েছে। বিএনপি করে এমন পরিবারের সন্তানদের চাকরিও আমার হাত দিয়ে হয়েছে। ১৪ বছর আগে রাঙ্গুনিয়ার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম মরিয়মনগর ডিসি সড়ক, পারুয়া ডিসি সড়ক ও কালিন্দীরানি সড়কের অবস্থা খারাপ ছিল। আজকে রাঙ্গুনিয়ার সব রাস্তাঘাট পিচ ঢালাই হয়ে গেছে। এভাবে রাঙ্গুনিয়ার প্রতিটি গ্রাম ও জনপদ বদলে গেছে। আপনারা যদি ভবিষ্যতেও সুযোগ দেন, তাহলে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
রাঙ্গুনিয়ায় প্রায় দশ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়ায় শুধু এলজিইডির মাধ্যমে ১ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছি। আরও অনেক ডিপার্টমেন্ট আছে, সে হিসাব আজকে আনিনি। এমন কোনো স্কুল, মাদরাস নেই যেখানে ভবন পায়নি। সরকারি কাজের কথা বাদ দিলাম, পরিবেশ মন্ত্রী থাকাকালে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১ কোটি টাকার টিন বিতরণ করেছি। প্রতিটি ইউনিয়নে ১টি করে পাওয়ারটিলার, কোনো কোনো ইউনিয়নে ৩টি করেও দিয়েছি। আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তহবিল থেকে ২৪টি নতুন মসজিদ ভবন করে দিয়েছি। প্রতি বছর বেশ কয়েকজনকে ওমরা, হজ্ব করতে পাঠানোর চেষ্টা করি। এখন রাঙ্গুনিয়ায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৫০টির বেশি ঘর করে দিচ্ছি। প্রতিটা ঘরে প্রায় ৩ লাখ টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। রোগী ও মরদেহ পরিবহনের জন্য নিজ উদ্যোগে অ্যাম্বুলেন্স ও ফ্রিজার ভ্যান দিয়েছি। রাঙ্গুনিয়ার প্রতিটি ইউনিয়নে দরিদ্র কৃষকদের পাওয়ার টিলার, রিকশা, ভ্যান দিয়েছি ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও অর্থায়নে।’
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ায় জনগণের দাবি ছিল দুটি সেতু। একটি শিলক-সরফভাটা, আর একটি হল রাজারহাট সেতু। সেখানে দু’টি জায়গায় শুধু শিলক নদীতে ৫টি সেতু হয়েছে। কেউ কেউ বলেছিলেন হাছান মাহমুদ দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার ছেলে সে উত্তর রাঙ্গুনিয়া কাজ করবে না। সে সময় আমি কথা দিয়েছিলাম নির্বাচিত হলে উত্তর রাঙ্গুনিয়ার কাজ আগে করবো। আমি কথা রেখেছি। কালীন্দিরাণী সড়ক আর মরিয়মনগর ডিসি সড়ক প্রসস্তকরণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। সেটিও হবে ইনশাআল্লাহ।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বর্তমানে রাঙ্গুনিয়ায় কোনো বাড়িতে বিদ্যুৎ নাই, সেটি অনুসন্ধানের বিষয়। অথচ ২০০৯ সালের আগে আমার বাড়িতেই বিদ্যুৎ ছিল না। এখন ১০ বছরের ছেলেকে চেরাগ ও হারিকেনের কথা জিজ্ঞেস করলে সে বলতে পারবে না। কারণ হারিকেন ও চেরাগ সে কখনো দেখেনি। আর এখন বাড়িতে বাড়িতে টেলিভিশন, ফ্রিজ, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন, আবার কারও কারও বাড়িতে এয়ার কন্ডিশনও আছে। এগুলো এমনি এমনি হয়ে যায়নি। এটি শেখ হাসিনার সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে সম্ভব হয়েছে।’
সার্বিক বিবেচনায় তিন তিন মেয়াদে শুধু সরকার দলের নয়, দলমত নির্বিশেষে সবারই এমপি হতে পেরেছেন একজন হাছান মাহমুদ। জনপ্রভু নয়, প্রকৃতপক্ষে জনসেবক হওয়ার পথ থেকে কখনও বিচ্যুত হননি তিনি। নির্বাচনী এলাকার জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমানভাবে খবর রেখে আস্থার শতভাগ প্রতিদান দিয়ে বিশ্বাস-প্রীতির দেদীপ্যমান পরাকাষ্ঠা দেখাতে পেরেছেন তিনি। ড. হাছান মাহমুদের জাদুকরী নেতৃত্বে রাঙ্গুনিয়ায় আজ কোনো অপূর্ণতা, পরিচয়-সঙ্কট নেই। নির্বাচনী এলাকায় কে আওয়ামী করে আর কে বিএনপি তা কখনও পরখ করেননি তিনি। যে-কারোরই বিপদে-আপদে সবার আগে ঝাপিয়ে পড়েছেন তিনি। ফলে রাঙ্গুনিয়াবাসী কাছে প্রকৃতপক্ষে মাটিও মানুষের নেতা হতে পেরেছেন হাছান মাহমুদ। রাঙ্গুনিয়ার অভূতপূর্ব উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও হাছান মাহমুদকে প্রাথী হিসেবে চায় এই জনপদের সর্বস্তরের মানুষ। কোনোমতেই হারাতে চান না, তাদের দুর্দিনের কাণ্ডারী হাছান মাহমুদকে।
ইতোমধ্যে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙ্গুনিয়া থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে তৃণমূল থেকে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করেছেন। তিনবার এমপি, তিনবার মন্ত্রী করেছেন। দলের বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পৃক্ত করেছেন। আমার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। তিনি যখন যে অবস্থায় কাজ করতে বলবেন, দায়িত্ব দেবেন, তা জীবনের বিনিময়ে হলেও শতভাগ সততা, বিশ্বস্ততার সাথে পালনের চেষ্টা করবো। কারণ রাজনীতি আমার কাছে ব্রত, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার আদর্শিক প্রতিভূ। তাঁর আদেশ-নির্দেশ আমার কাছে শিরোধার্য।’