ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার আল-শিফা হাসপাতালে শিশুসহ ১৭৯ জনকে গণকবর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বরাতে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আলজাজিরা।
গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই জ্বালানি সঙ্কটে পড়ে ফিলিস্তিনের হাসপাতালগুলো। সর্বশেষ এ সপ্তাহের শুরুতে জ্বালানি সরবরাহ ফুরিয়ে গেলে শুধু আল-শিফা হাসপাতালেই ৩৪ জনের মৃত্যু হয়। কিন্তু হাসপাতালের আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনীর টহলের কারণে মৃতদেহগুলোকে কবর দেয়া যাচ্ছিল না।
আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাম্মদ জাকাউত জানিয়েছেন, হাসপাতালের আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনী অবস্থান করায় লাশগুলো বাইরে নিয়ে সমাহিত করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে মঙ্গলবার সকালে গণকবর খোঁড়া শুরু হয়। যথাসময়ে কবর না দেয়ায়, হাসপাতালজুড়ে লাশের গন্ধে চিকিৎসা পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে হাসপাতালে, পর্যাপ্ত ওষুধ, সরঞ্জামাদি, প্রয়োজনে রক্তের সরবরাহ না থাকায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী থাকলেও পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন,‘এই হাসপাতালে রোগীদের কোনও চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা যা-ই করি না কেন, রোগীরা মারা যাচ্ছে। প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হলেও কাউকে রক্ত দেওয়াও যাচ্ছে না। এমনকি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলেও কোনও ব্যবস্থা নেই। এখন বসে বসে রোগীর মৃত্যু দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই আমাদের’।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, আল-শিফা হাসপাতালে ইনকিউবেটর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে তিন নবজাতকের
মৃত্যু হয়েছে। আরও ৩৬ শিশুকে কোনভাবে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে।
হামলা শুরুর পর গত এক মাসে গাজার প্রতিটি হাসপাতাল এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার ৩৪টি হাসপাতালের মধ্যে প্রায় ২৫ টিতে এখন আর কোনও পরিষেবা নেই। নেই কোনও অ্যাম্বুলেন্সও। কারণ অ্যাম্বুলেন্সগুলো ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তাদের ১৮টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে এখন অবশিষ্ট আছে মাত্র ৫টি।