কেরানীগঞ্জে পিকাপ চোর চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার যন্ত্রপাতি উদ্ধার

ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে পিকাপ চোর চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে চোরাইকৃত পিকাপের খন্ডিত বডি ও যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন- শাহিনুর ইসলাম (৩৫), মো. বেল্লাল শেখ (৪৫) ও সাগর সরদার (৩৫)। বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কেরারীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর। ।
তিনি জানান, গত ১৬ সেপ্টম্বর রাত সাড়ে ১১ টার দিকে জামাল নক্তি নামে এক ব্যক্তি কাজ শেষ করে তার টাটা হলুদ রংয়ের পিকআপ ভ্যান কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ডাকাপাড়া ডায়মন্ডের মাঠ সংলগ্ন ওয়ালটন শোরুম এর সামনে রেখে চলে যায়। পরবর্তীতে পরেরদিন ( ১৭ সেপ্টম্বর) সকাল অনুমান ৭টার দিকে দেখতে পান যে, উক্ত স্থানে পিকআপটি নাই। আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে জানাতে পারে এক ব্যক্তি ১৭ সেপ্টেম্বর ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই পিকাপটির আশপাশ দিয়ে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করে ছিল। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে পিকাপ গাড়ীর মালিক জামাল নক্তি কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ থানার একটি চৌকস তদন্তদল ঘটনাস্থলের বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে পিকআপ চুরির ঘটনায় জড়িত আন্তঃজেলা চোরচক্রকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদের সহযোগিতায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রিয়াজ মাহমুদ এর নেতৃত্বে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার একটি চৌকস আভিযানিক দল কেরাণীগঞ্জ মডেল থানাধীন বন্দ ডাকপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেন। এরআগে তারা পিকআপটি চালিয়ে নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন দেলপাড়া এলাকায় তাদের অপর সহযোগী আসামি মো. সাগর সরদারের কাছে যায়। সাগর পিকআপটির জন্য তাদেরকে ২৫ হাজার টাকা দেয়। সাগর চুরি করা পিকাপটিতে অন্য একটি গাড়ীর নাম্বার প্লেট লাগায় এবং তার সাথে থাকা অন্য একটি পিকাপের সাহায্যে চুরি করা পিকআপটিকে রশি দিয়ে বেধে তার গেরেজে নিয়ে যায়। গেরেজে নিয়ে গাড়ীটির চেচিস কেটে ফেলে এবং ইঞ্জন এবং আনুসঙ্গিক অন্যান্য যন্ত্রাংশ খুলে ফেলে। বিল্লালকে নিয়ে নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন কুতুবপুর দেলপাড়া টাওয়ারপাড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। পরে পুলিশ সাগরের বাসা থেকে চোরাইকৃত পিকাপের একটি পুরাতন গিয়ার বক্স, চারসেট স্প্রীং পাতি, একটি এসি পাম্প, একটি পুরাতন রেডিয়েটর, একটি পুরাতন ফল্ট এক্সেল, একটি স্টার্নিং উইল, চারটি পুরাতন ছকেট জাম্পার, একটি পুরাতন ঝগ যাহার মূল্য অনুমান ৬ লাখ টাকা, একটি নীল ও হলুদ রংয়ের টাকা সিঙ্গেল কেভিন পিকআপ যাহার রেজি নং- ঢাকা মেট্রো-ন-২০-৪৫২৮, যাহার পিছনের বডির মধ্যে থেকে চোরাইকৃত পিকাপ গাড়ীর একটি পুরাতন ইঞ্জিন এবং পাঁচটি ৫.৫০-১৩ সাহজের বিভিন্ন কোম্পানির টায়ার যাহার মূল্য অনুমান ২ লক্ষ টাকা এবং পিকআপ গাড়ীটির মূল্য ১১লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। জব্দকৃত এই পিকাপটি চোরাই কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় এবং চোরাই মালামাল পিকআপের ভিতর থেকে উদ্ধার হওয়ায় বিধি মোতাবেক অত্র মামলার চোরাই কাজে ব্যবহৃত আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।