পৃথিবীর যে কোনো দেশে খরা ও দীর্ঘ তাপদাহের পরে অতিবৃষ্টি হলে আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ রিডিংয়ের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ এমনটি জানিয়েছেন। নিজ দেশের প্রসঙ্গ এনে তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় অনাবৃষ্টি হলে দেশটিতে আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তিনি একটি পরীক্ষায় দেখিয়েছেন যে খরার পরে বৃষ্টি হলে মাটিতে কী ঘটে।
টুইটারে পরীক্ষাটির একটি ভিডিও পোস্ট করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আবহাওয়া বিভাগের অধ্যাপক রব থম্পসন। বর্ষা, গ্রীষ্ম ও তীব্র খরার সময় তিনটি পানিভর্তি গ্লাস নিয়ে তিনি পরীক্ষাটি করেছেন।
প্রথম পরীক্ষায় একটি পানিভর্তি গ্লাস ভেজা ঘাসের ওপর উল্টো করে রাখা হয়। দেখা যায় গ্লাসের পানি দ্রুত মাটিতে মিশে যায়।
দ্বিতীয় পরীক্ষায় দেখানো হয় গ্রীষ্মের সময়কার ঘাস ও শুষ্ক মাটি । সেই ঘাসের ওপর পানিভর্তি গ্লাসটি রাখা হলে সেই পানি অনেকটা দ্রুত শুষে নেয় মাটি।
কিন্তু তৃতীয় পরীক্ষায় যে ফল পেয়েছেন ওই অধ্যাপক তাতে তিনি অবাক হয়ে যান। তীব্র তাপদাহ ও খরার পর মাটি অত্যন্ত শুষ্ক ও চৌচির হয়ে যায়। সেই সময় মাটিতে পানি মিশতে অনেক সময় লেগে যায়।
ডক্টর থম্পসন এর প্রভাব ব্যাখ্যা করে বলেন, `খরার পরে ভারী বৃষ্টিপাত বিপজ্জনক হতে পারে এবং এতে ফ্ল্যাশফ্লাড (আকস্মিক বন্যা) হতে পারে।`
তিনি বলেন, শুকনো মাটিতে পানি দেয়া কঠিন। এমন মাটি পানি শুষে নিতে সময় বেশী নেয়।
পরীক্ষায় ভেজা ঘাসে গ্লাসের সব পানি শোষণ করতে সময় লেগেছে মাত্র ৯ সেকেন্ড। দ্বিতীয় গ্লাসের পানি শুষে নিতে সময় নিয়েছে ৫২ সেকেন্ড। অতি শুষ্ক মাটিতে তৃতীয় গ্লাসের পানি শুষে নিতে সময় লেগেছে সাড়ে চার মিনিট।
তিনি পরীক্ষায় দেখিয়েছেন, অতিশুষ্ক মাটিতে পানি কোথাও যেতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, এমন চৌচির মাটিতে ভারী বৃষ্টিপাত হলে তা মাটিতে প্রবেশ করতে সময় নেয় এবং তা আবার রোদ্র উঠলে বাষ্পীভূত হয়ে যেতে পারে।
এসব কারণে খরা ও তীব্র তাপদাহের পর ভারী বৃষ্টিপাত হলে আকস্মিক বন্যার শঙ্কা বেড়ে যায়।