পলিটিক্যাল ডেস্ক: গণসমাবেশের তিন দিন আগ থেকেই ফরিদপুরে আসতে শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। গণপরিবহণ বন্ধ হলে দুর্ভোগ এড়াতে এ পন্থা অবলম্বন করছেন তারা।
বুধবার রাতে শরীয়তপুর জেলাসহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীদের গণসমাবেশস্থলের কাছে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, পরিবহণ ধর্মঘট হবে এমন ধারণা মাথায় রেখেই সমাবেশস্থলে আসতে যেন সমস্যা না হয়, সে জন্য ২-৩ দিন আগে নেতাকর্মী-সমর্থকরা আসতে শুরু করেছেন। জেলা-উপজেলা থেকে অনেক লোকজন এরই মাঝে ফরিদপুরে সমাবেশস্থলের কাছে চলে এসেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খোকন তালুকদারের নেতৃত্বে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ফরিদপুর শহরতলির আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে পৌঁছান।
শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সদস্য গাউসুর রহমান জানান, বুধবার রাত ৮টার দিকে তারা চারটি ট্রাকযোগে শরীয়তপুর থেকে রওনা দিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুরের গণসমাবেশস্থলে পৌঁছান। তাদের সঙ্গে খোকন তালুকদার ছাড়াও শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহানদার আলীসহ অন্য নেতাকর্মীরা রয়েছেন।
জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা বলেন, বুধবার রাতে প্রথমে শরীয়তপুর জেলা থেকে একটি দল সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছায়। এর পর মাদারীপুর থেকে এসেছে অপর একটি দল। এর পর রাজবাড়ী জেলা থেকে একাধিক দল এসে সমাবেশস্থলের কাছে ধুলদী গ্রামে তাঁবু গেড়ে অবস্থান নেন। সঙ্গে তারা রান্নার সরঞ্জামাদি নিয়ে সেখানে রাতের খাবার খেয়েছেন এবং থেকেছেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একেএম কিবরিয়া বলেন, প্রথম দল হিসেবে রাতে শরীয়তপুর থেকে নেতাকর্মীদের একটি অংশ এখানে যোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আরও নেতারা আসতে শুরু করেছেন। প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী শরীয়তপুর জেলা থেকে এই গণসমাবেশে যোগ দেবেন। শরীয়তপুরের বিএনপি নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলে পৌঁছে রাতের খাবার খিচুড়ি খেয়ে সমাবেশস্থল ও আশপাশের বাড়িতে রাতযাপন করেছেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের এই বিভাগীয় গণসমাবেশের সমন্বয়ক শামা ওবায়েদ বলেন, সরকার এই গণসমাবেশে আসা জনস্রোত বাধাগ্রস্ত করতে নানাভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। এ জন্য নেতাকর্মীরা আগভাগেই সমাবেশস্থলে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সারাদেশে বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ১২ নভেম্বর বেলা ১১টায় গণসমাবেশ শুরু হবে। তবে পথে পথে নানা বাধা এবং গণসমাবেশে জনসমাগম সংকুচিত করতে সরকার বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। তাই নির্ধারিত সময়ের আগে থেকেই নেতাকর্মীরা সভাস্থলে আসবেন।
ফরিদপুরের বিএনপি নেতারা বলছেন, এই গণসমাবেশে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে। সমাবেশস্থল থেকে শহর পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হবে এমন প্রস্তুতিই নিচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, সমাবেশ ঘিরে পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা ও স্বাভাবিক রাখতে, জনগণের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক দায়িত্ব নির্বিঘ্ন রাখতে পুলিশ প্রতিনিয়ত কাজ করছে।