যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে ওপেক। এতে হোয়াইট হাউজ ও সৌদি রাজপরিবারে মধ্যে নতুন করে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। যদিও কয়েক বছর ধরেই দেশ দুইটির মধ্যে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। এক সময়ে মধ্যেপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভালো বন্ধু ছিল সৌদি আরব, যা বিভিন্ন সময়ে দুই দেশের কর্মকর্তাদের দেওয়া বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে।
সম্প্রতি ওপেক যে জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে তা ঠেকানোর জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। কারণ মধ্যবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তাছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধের এই সময়ে রাশিয়ার আয়ও কমাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি, পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক ও অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা মিত্র দেশগুলোকে ওপেকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছিল।
বাইডেনের শীর্ষ জ্বালানিবিষয়ক প্রতিনিধি আমোস হোচস্টাইনের পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ব্রেট ম্যাকগার্ক ও প্রশাসনের বিশেষ প্রতিনিধি ইয়েমেন টিম লেন্ডারকিং জ্বালানি ইস্যুতে আলোচনার জন্য গত মাসেও সৌদি সফর করেছেন। এর আগে জুলাইতে বাইডেন নিজেও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করতে সৌদি সফর করেছেন। ওপেকের বর্তমান সিদ্ধান্তের ফলে মার্কিন সব চেষ্টাই ব্যর্থ হলো।
সৌদির উদ্ধৃতি দিয়ে সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি বাজারে আরও তেল চায় তাহলে তাদের উচিত নিজেদের উৎপাদন বাড়ানো।
মার্কিন জ্বালানি তথ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে সবচেয় বেশি জ্বালানি তেল উৎপাদন ও ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার সৌদির সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন বাইডেন। তবে আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে ওয়াশিংটন আরও হস্তক্ষেপ করবে বলেও জানান তিনি। এর আগে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদির মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়।
অব্যাহত দাম কমার লাগাম টানতে রপ্তানিকারী দেশগুলোর সংগঠন ওপেক ও সহযোগীরা দিনে ২০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে রাশিয়ার তেলের দাম বেঁধে দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোও একমত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই দুই সিদ্ধান্তেই জ্বালানি তেলের দর ফের মাথাচাড়া দিতে শুরু করলে চিন্তা বাড়বে আমদানিকারকদের।