ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক রণেশ মৈত্রের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে (৩০ সেপ্টেম্বর) পাবনার মহাশ্মশানে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
এর আগে সোমবার রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ও স্বজনরা জানান, সকালে ঢাকা থেকে তার মরদেহ পাবনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ খবরে শহরের দিলালপুর মহল্লায় রণেশ মৈত্রর বাড়িতে ভিড় করেন স্বজন, সহকর্মী, প্রতিবেশীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রণেশ মৈত্রের শবদেহ বহনকারী গাড়িটি তার বাড়ির সামনে পৌঁছালে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
রণেশ মৈত্রর সহধর্মীনি পূরবী মৈত্র জানান, রণেশ মৈত্র জীবদ্দশায় নিজের জন্য কিছুই করতে পারেন নি। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি যে বাসায় থাকতেন তা একটি অর্পিত সম্পত্তি।
বাবার মৃত্যুর সংবাদে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী তার বড় ছেলে প্রবীর মৈত্র বাংলাদেশে এসেছেন। তিনি জানালেন তার বাবা জীবনের পুরোটা সময় মেহনতি মানুষের কথা ভাবতেন। সাম্য, ধর্মনিরপেক্ষ, আদর্শ দেশ হিসাবে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াক এটুকুই তিনি চেয়েছিলেন।
দুপুর ২ টার দিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য রণেশ মৈত্রের মরদেহ পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বরে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান সূচক গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। সেখানে রাজনীতীবিদ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সামাজিক, পেশাজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা শেষ শ্রদ্ধা জানান।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুর হক টুকু শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বলেন, তার মৃত্যুতে পাবনার রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিকতায় যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা সহজে পূরণ হবার নয়।
স্বাধীনতা চত্বর থেকে তার মরদেহ পাবনা প্রেস ক্লাবে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বিকেলে তার মরদেহ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য পাবনা মহাশ্মশানে নেওয়া হয়।
ভাষা সৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ সাংবাদিক রণেশ মৈত্র পাবনা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মহান ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রাখেন। ২০১৮ সালে তিনি সাংবাদিকতায় একুশে পদক লাভ করেন।