Share Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email সিলেট প্রতিনিধি: সুরমা নদীর পানি কমায় সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে। বিভাগের বেশির ভাগ সড়ক এখনো পানির নিচে। পানি নামলেও ভেসে উঠছে ক্ষত-বিক্ষত সড়ক।রোববার (২৬ জুন) সিলেটের প্রধান সড়কগুলো পরিদর্শন করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান জানান, চলতি বন্যায় সিলেট বিভাগে সওজের অধীন অর্ধেক সড়কই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিমাণে সেটি প্রায় ৮০০ কিলোমিটার। এরআগে, সিলেট বিভাগের বন্যা দেশের আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। উজান থেকে আসা ঢলে এই বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে গিয়েছিল। বাকি তিন জেলার শহরের কিছু উঁচু স্থান, পাহাড়ি এলাকা এবং ভবন ছাড়া সবখানেই ছিল পানি আর পানি।স্থলভাগে গাঢ় বেগুনি রঙে আচ্ছাদিত এলাকা হলো বন্যায় ডুবে যাওয়া অংশ। আর নদীতে গাঢ় বেগুনি রং মানে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি। হালকা নীল রং ব্যবহার করা হয়েছে বন্যাকবলিত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ এলাকা বোঝাতে। আর গাড় বেগুনি দিয়ে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে বোঝানো হয়েছেস্থলভাগে গাঢ় বেগুনি রঙে আচ্ছাদিত এলাকা হলো বন্যায় ডুবে যাওয়া অংশ। আর নদীতে গাঢ় বেগুনি রং মানে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি। হালকা নীল রং ব্যবহার করা হয়েছে বন্যাকবলিত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ এলাকা বোঝাতে। আর গাড় বেগুনি দিয়ে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে বোঝানো হয়েছেছবি সূত্র: যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ১৯৯৮ সালের জুন মাসে সিলেট বিভাগে অনেকটা এমন বন্যা হয়েছিল। কিন্তু এর পর বেশির ভাগ বন্যা মূলত হাওর ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। ২০১৯ সালে সুনামগঞ্জ ও সিলেট শহরে দুই তিন দিনের জন্য হঠাৎ বন্যা হয়। কিন্তু পুরো সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হওয়ার মতো বন্যা হয়নি।বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুইয়া প্রথম আলোকে বলেন, দেশের একটি বিভাগের প্রায় ৮০ শতাংশ ডুবে যাওয়ার মতো বন্যা এর আগে বাংলাদেশে হয়নি। সিলেটে এর আগে যত বন্যা হয়েছে, তা মূলত হাওর এলাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এবার গ্রাম, শহর ও উঁচু এলাকাও পানির নিচে চলে গেছে। আর সোমবারের আগে এই পানি নামার সম্ভাবনা কম। কারণ, উজানে আগামী দুই দিন অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূ-উপগ্রহভিত্তিক সংস্থা ইসিএমডব্লিইউর পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামীকাল বাংলাদেশের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হবে। এর আগে গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে; যা ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি। আর গত তিন দিনে সেখানে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই অল্প কয়েক দিনে এত বৃষ্টির রেকর্ডও গত ১০০ বছরে নেই।বাংলাদেশের নদী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিলেট বিভাগের সুরমা, কুশিয়ারা, গোয়াইনসহ বেশির ভাগ নদ-নদীতে পলি পড়ে অনেক এলাকা ভরাট হয়ে গেছে। নদ-নদীর বুক উঁচু হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানির ঢল ধরে রাখতে পারছে না। ফলে পানি উপচে দ্রুত বসতি ও শহর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। হাওর এলাকায় কৃষিকাজসহ নানা তৎপরতার কারণে পানি ধারণের ক্ষমতা কমে গেছে। যে কারণে বন্যার পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে।