ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: ইউক্রেন নিয়ে ‘পক্ষপাতমূলক’ সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সাংবাদিককে নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া।
বিবিসি জানিয়েছে, রুশ সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার জবাব দিতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন বিবিসির ক্লাইভ মাইরি, ওরলা গুয়েরিন ও নিক বেক। তারা প্রত্যেকে ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।
শীর্ষ ২৯ ব্যক্তির ওই তালিকায় কয়েকজন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ছাড়াও আছেন বিবিসির ডিরেক্টর জেনারেল টিম ডেভি।
বিবিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংবাদ মাধ্যমটি ‘স্বাধীন এবং বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন প্রকাশ অব্যাহত রাখবে’।
এছাড়া স্কাই টিভি, টাইমস, গার্ডিয়ান, চ্যানেল ফোর ও আইটিভির সাংবাদিকদেরও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রাখা হয়েছে। অন্যদিকে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পক্ষপাতমূলক খবর প্রচার করে ব্রিটিশরা রুশ ফোবিয়াকে উসকে দিচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তারা ইচ্ছাকৃত মিথ্যা ও একতরফা তথ্য প্রচারে জড়িত। ভবিষ্যতে তালিকা সম্প্রসারণের কাজ অব্যাহত থাকবে বলে জানায় মস্কো। রাশিয়া ইতোমধ্যে কয়েকশ’ নির্বাচিত ব্রিটিশ এমপিকেও নিষিদ্ধ করেছে।
রাশিয়ার যুদ্ধ মূলত পশ্চিমের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধ। রাশিয়া কখনোই চায়নি, তার সীমান্তবর্তী দেশগুলো ন্যাটোর সদস্য হোক। কিন্তু পোল্যান্ড ও বাল্টিক দেশকে (ইস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া) ন্যাটোর সদস্য করা হয়েছে। এসব দেশের ন্যাটোভুক্তি নিয়ে রাশিয়ার কোনো অসন্তোষ আমলে নেয়নি মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটটি। তাই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী।
মস্কোর মূল লক্ষ্য, ইউক্রেনীয় জ্বালানিসমৃদ্ধ পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল দখল করা। ইউক্রেন যুদ্ধের ১০০ দিনের মধ্যে রুশ বাহিনী লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, মারিউপোল হয়ে খেরসন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। বর্তমানে তারা সেভেরোদোনেৎস্ক শহর দখলের পথে রয়েছে। এছাড়া কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর ওদেসাও দখল নিতেও মরিয়া মস্কো।
অন্যদিকে রাশিয়াকে ঘায়েল করতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে উল্টো বিপদে পড়েছে পশ্চিমারাই। নিষেধাজ্ঞার আগের তুলনায় রাশিয়ার অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে। তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ার ফলে জ্বালানিসমৃদ্ধ রাশিয়ার রফতানি রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব মতে, যুদ্ধের আগের তুলনায় রাশিয়ার যে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল, এখন তার তিনগুণ বেশি অর্থ জমা হয়েছে।