এডুকেশন ডেস্ক: ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে ইট-পাটকেল বিনিময়ের ঘটনায় প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (৩০ মে) সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের একজন নেতাকে মারধর করা হয়। মারধরকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে ইট-পাটকেল বিনিময় হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মুইন নাদিম আল মুন্নাকে হল থেকে বের করে দেন বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ গ্রুপের নেতা-কর্মীরা।
আজ (সোমবার) দুপুর ১টার দিকে মুন্না বিশ্ববিদ্যালয়ের কে.আর মার্কেটে এলে সভাপতি গ্রুপের প্রায় ২০ জন তার ওপর চড়াও হয়। মুন্নাকে কিল, ঘুষি ও থাপ্পড় মারলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতা-কর্মীরা এ ঘটনা জানতে পারলে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।
বিকেল থেকে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সভাপতি রিয়াদ গ্রুপের সদস্যরা হাতে লাঠি-সোটা নিয়ে শামসুল হক হলের সামনে আসেন। পরে বাকৃবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান গ্রুপের অনুসারীরাও আসেন। দুই পক্ষই ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
এতে ঈশা খাঁ হলের ৮-১০ জনসহ প্রায় ৫০ জন আহত হন। গুরুতর আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে পুলিশ এসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মুইন নাদিম আল মুন্না দাবি করেন, আমি সাধারণ সম্পাদকের রাজনীতি করি। সভাপতির রাজনীতি করি না বলে আমাকে মারধর করেন বঙ্গবন্ধু হলের আলিফ, ইমন, সাইদ, শাহরিয়ার এবং ঈশা খাঁ হলের আদনান সাইদ অনিকসহ প্রায় ২০ জন। এ সময় একজন শিক্ষক এসে আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করে পাঠিয়ে দেন। পরে হতাশার মোড় থেকে আমাকে উঠিয়ে সোহরাওয়ার্দী হলে নিয়ে যেতে চান তারা। এ সময় আমার সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হয়। পরে শামসুল হক হলের ফাহিম ভাইসহ আরও কয়েকজন গিয়ে আমাকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, বাকৃবিতে যে ঘটনাটি ঘটেছ, তা অনাকাঙ্ক্ষিত। শামসুল হক হলের পুরোটাই সাধারণ সম্পাদক নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে তাদের মধ্যে থেকে যারা ঘটনা ঘটিয়েছেন তাদের শনাক্ত করে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। মুন্নাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়নি, তিনি নিজ ইচ্ছায় হল থেকে বের হয়ে গেছেন। হল থেকে বের হয়ে গেলেও হলের বিভিন্ন জুনিয়রকে তার নিজের গ্রুপে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এ ঘটনার জন্য কয়েকজন তাকে আজ দুপুরে চর-থাপ্পড় দিয়েছে।
সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মহির উদ্দিন বলেন, আমরা উভয় পক্ষের নেতার সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসায় দ্রুত চেষ্টা করছি। যারা আহত হয়েছেন, তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে মারামারির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনব।