আবহাওয়া ডেস্ক,এইউজেডনিউজ২৪: ঘন কুয়াশায় ছেয়ে গেছে দেশের অন্যান্য অঞ্চলও। আজ চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আগামী দু’দিন তাপমাত্রা আরো কমার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রাজধানীসহ সারা দেশে চলছে কনকনে ঠাণ্ডা। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় ঢাকার তাপমাত্রা আরো ১ থেকে ২ ডিগ্রি কমবে। আর ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাবে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল।
এদিকে, প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে দেশের উত্তরাঞ্চল। ধীরে ধীরে কমছে তাপমাত্রা। সাথে কনকনে হিমেল হাওয়া। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে চারপাশ।ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এসে পুরো উত্তরাঞ্চলজুড়েই এখন শীতের দাপট। গত কয়েকদিন এমনই আবহাওয়া বিরাজ করছে কুড়িগ্রামে। দেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বাড়িয়েছে ঝিরঝিরে বৃষ্টি।
গত দুদিন ধরে রংপুর অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে তিস্তার চরাঞ্চলের অভাবি মানুষের শীত নিবারণে অগ্নিকুণ্ডই একমাত্র ভরসা হয়ে।
শীত জেঁকে বসায় রংপুরের পাঁচ জেলায় প্রায় ১২ লাখ মানুষ এর শিকার। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী এসব মানুষের অধিকাংশই ভাসমান-যাদের কোনো শীতবস্ত্র নেই। সরকারি এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, প্রায় এক যুগ আগে উত্তর জনপদের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিহীন ও অতিদরিদ্র পরিবারের যে জরিপ চালানো হয় তাতে দেখা গেছে, খুব শীতের সময় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিবারের দিনে গড় আয় ২৫ টাকা। এ কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী এসব পরিবারের লোকজনের পক্ষে কোনোভাবেই নিত্যদিনের খাবার যোগানোর পর শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ্য থাকে না। পরিণতিতে তারা শীত নিবারনের জন্য চট, ছালা, খড়ের লেপ ব্যবহারসহ সারারাত ধরে অগ্নিকুণ্ড ব্যবহার করছে। একদিকে প্রচণ্ড শীত, অন্যদিকে কনকনে বাতাসে শীতের তীব্রতা বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
সরেজমিনে আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে রংপুরের কাউনিয়ার তিস্তাকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শীতে অভাবী মানুষের জীবন বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছে। গরম কাপড় না থাকায় চরাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ খড়-কুটো সংগ্রহ করছে। শীত নিবারনে রাতে তারা আগুন জ্বালিয়ে চেষ্টা করছে শরীরের উষ্ণতা ফিরিয়ে আনার।
দিনাজপুর গত এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৪ ডিগ্রী রেকর্ড করা হয়েছে। তখন তাপমাত্র ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নেমে আসতে পারে। ঠাণ্ডার তীব্রতা বেড়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা মৌলভীবাজারেও।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রাজধানীতে সূর্যের দেখা মিলছে না বললেই চলে। এমন অবস্থা চলবে আরো দুই দিন। স্থান ভেদে ২১ ও ২২ ডিসেম্বরের দিকে ঠাণ্ডা অনুভূতি কমে আসবে। এরপর আসতে পারে নিম্নচাপ। এছাড়া ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ দেখা দিতে পারে মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ।
এছাড়া, বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীতে তাপমাত্রা ১৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার রাজধানীতে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১৬-১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। এদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজারহাটে ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘বাতাসে আদ্রতা যে হারে বাড়ছে সে হারে গতিবেগ বাড়তে থাকলে তীব্র শীতে ঢাকা থাকবে রাজধানী। সেক্ষেত্রে, উত্তরের জেলাগুলোয় শীতের তীব্রতা আরও প্রকট হবে। রাজধানীতে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে। তবে ২১ ডিসেম্বরের পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।’
তিনি আরও বলেন, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। থাকতে পারে আরও পাঁচ দিন। ২৪ ডিসেম্বরের পর তাপমাত্রা বাড়তে পারে। কুয়াশাও কিছুটা কমবে। কিন্তু জানুয়ারির শুরুতে আবার শৈত্যপ্রবাহ বইতে পারে।সূ্ত্র : এটিএন বাংলা ও অর্থসূচক