২০১৩ সালের ২৪শে এপ্রিল। হঠাৎ ধসে পড়ে আট তলা ভবন। সাভারের রানা প্লাজা। যেখানে ছিল বেশ ক’টি পোশাক কারখানা।
ধ্বংসস্তূপ নীচে চাপা পড়াদেরও প্রায় সবাই পোশাক কারখানার শ্রমিক। প্রাণ যায় ১ হাজার ১৩৬ শ্রমিকের। দুই হাজার শ্রমিক আহত ও চিরতরে পঙ্গু হন। যা ছিল দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি।
ওই দুর্ঘটনায় অবহেলাজনিত হত্যা, ভবন নির্মানে দুর্নীতি ও ইমারত আইনে চারটি এবং শ্রম আইনে ১১টি মামলা দায়ের করা হয়।
হত্যা মামলায় সাত বছর আগে গেলো ২০১৫ সালের ২৬শে এপ্রিল ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। মামলায় ৪১ আসামির মধ্যে তিন আসামি মারা গেছেন। আর রাষ্ট্রপক্ষের ৫৯৪জন সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন কেবল একজন।
ইমারত আইনে দায়ের করা দুই মামলারও একই অবস্থা। এসব মামলায় এখনও ২৫ আসামি পলাতক আর জামিনে ১৫ জন। শুধু কারাগারে আছেন মামলার প্রধান আসামি সোহেল রানা।
রাষ্ট্রপক্ষের ব্যর্থতার কারণেই বিচার কাজ শেষ হচ্ছেনা বলে অভিযোগ আসামিপক্ষের।
রানার আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘একজন আসামীকে আপনি নয় বছর আটকে রাখবেন, বিচার করবেন না। বিচার অপসংস্কৃতির মতো অবস্থা হয়ে গেছে। অন্য সকলেই ৪১জন আসামীর মধ্যেই ৪০জনই জামিনে আছে। সেখানে আমার জামিনও হচ্ছে না আবার বিচারও হচ্ছে না।’
মামলার ধীরগতিতে রাষ্ট্রপক্ষের কোন গাফিলতি ছিলনা বলে দাবি, সরকারি কৌঁসুলির।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিমল সমদ্দার বলেন, ‘প্রথম ধার্য তারিখ থেকেই মামলার বাদীকে আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু আসামী পক্ষে এই যে মোট ৪১জন আসামী, তার মধ্যে দুইজন আসামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য নেয়া যাবে না বা মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না, এমন এটা স্টেয় ওর্ডার ছিল মহামান্য হাইকোর্ট থেকে। বাদী সাক্ষী বারবার আদালতে উপস্থিত হলেও হাইকোর্টের আদেশে এই সাক্ষ্যটা গ্রহণ করা যায়নি।’
আগামী ২৯শে মে হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক রয়েছে। দুদকের দায়ের করা ভবন নির্মানে দুর্নীতি মামলাটি রায় ঘোষণা করা হয়েছে ২০১৭ সালের ২৯শে আগস্ট। রায়ে ভবন মালিক রানা ও তার মায়ের তিন বছর করে সাজা হয়।