রাজধানী ডেস্ক: সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলটির দুজন সাংসদ এই মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ায়, দেশেও দাম কমানোর দাবি জানান তারা।
রোববার (১৪ নভেম্বর) পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাপার দুই এমপি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘কোভিড মোকাবিলা করে মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময় হঠাৎ করে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি করা হল। বলা নেই কওয়া নেই কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। গত কয়েক বছরে একসঙ্গে এত পরিমাণ মূল্যবৃদ্ধি করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিজেলের দাম বাড়ানো হল বৃহস্পতিবার। তারপর পরিবহনগুলো ধর্মঘটে চলে গেলো। এতে পরীক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ডিজেলের দাম বাড়ার পর বাসভাড়া ২৭ শতাংশ, নৌযান ভাড়া ৩৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, যা তেলের মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় অনেক বেশি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, এখানে সমন্বয় নেই কেন?’
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ৭৫ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। বর্তমান সরকার যেহেতু নির্বাচিত সরকার, জনগণের কথা চিন্তা করে কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে এই মূল্যবৃদ্ধি না করে কি বিকল্প ব্যবস্থা করা যেত না? এমনিতেই বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে তেলের কারণে আরও অন্যান্য পণ্যের মূল্য আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর ওয়াস্তে আপনি দেশের মানুষের কথা ভেবে তেলের দাম কমান। না হয় বিকল্প কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মানুষকে বিপজ্জনক অবস্থা থেকে মুক্তি দেন। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমতে শুরু করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।’
জাপার রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ‘ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে চরমভাবে আঘাত করেছে। দ্রব্যমূল্যও বেড়ে গেছে। প্রতিবেশী দেশ স্পর্শকাতর এই জ্বালানির মূল না বাড়িয়ে ঠিক রেখেছে। আমাদের সরকার ইচ্ছা করলে এটা করতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে যায় তখন কিন্তু আমাদের এখানে কমানো হয় না।’
রুস্তম আলী আরও বলেন, ‘বৃদ্ধির পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের নতুন করে চিন্তা করা উচিত। জনস্বার্থে এটা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। হয় মূল্য কমাতে হবে, না হয় ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে।’