স্পোর্টস ডেস্ক: বাছাইপর্ব দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ওমানের মাস্কাটে আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। সেখান থেকে সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি ও টি-স্পোটর্স।
ব্শ্বিকাপের প্রস্তুতিপর্বটা মোটেও ভালো যায়নি বাংলাদেশের। একমাত্র স্বাগতিক ওমান ছাড়া শ্রীলংকা ও আয়ারল্যান্ডের কাছে হারের তেতো স্বাদ নিতে হয়েছে তাদের। তবে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচের হতাশাজনক পারফরম্যান্সকে পেছনে ফেলে জয় দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যাত্রা করতে চায় টাইগাররা।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে গ্রুপ ‘বি’তে রয়েছে বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ড ছাড়া এ গ্রুপে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের প্রতিপক্ষ ওমান ও পাপুয়া নিউগিনি। সুপার টুয়েলভে খেলার যোগ্যতা অর্জনে লড়াই করবে এই চার দল।
১৭ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত এই পর্বে একে অপরের বিপক্ষে একবার করে মুখোমুখি হবে তারা। পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুই দল পরের রাউন্ডে খেলবে। টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ের ভিত্তিতে গ্রুপপর্বে সেরা হওয়ার দৌড়ে ফেভারিট বাংলাদেশ। শক্তি ও ক্রিকেট ঐতিহ্যে স্কটল্যান্ড প্রথম রাউন্ডের ‘বি’ গ্রুপে টাইগারদের প্রধান প্রতিপক্ষ। নেদারল্যান্ডস ও নামিবিয়ার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে জয়ের পর আত্মবিশ্বাসী স্কটিশরা।
২০১২ সালে নেদারল্যান্ডসের মাটিতে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয় স্কটল্যান্ড। ৫৮ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেলে স্কটিশদের জয়ের স্বাদ দেন রিচি ব্যারিংটন। এখনও স্কটল্যান্ড দলের প্রধান খেলোয়াড় তিনি।
এ দিকে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়েই বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে টাইগাররা। সর্বশেষ ১০ ম্যাচে সাত জয়ের স্বাদ পেয়েছিল তারা। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের কীর্তি গড়েছে মাহমুদউল্লাহর দল। বিশ্বের দুই পরাশক্তিকে হারানোর আগে জিম্বাবুয়ের মাটিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে তারা।
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে দুটি সিরিজ জয়ে বাংলাদেশ মানসিকভাবে এগিয়ে থাকবে বলেই মনে করছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
আনঅফিসিয়াল ম্যাচে ওমান ‘এ’ দলের বিপক্ষে ২’শর ওপর রান দলের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু আইসিসির অফিসিয়াল দুটি ম্যাচে হার চিন্তায় ফেলেছে বাংলাদেশকে। শ্রীলংকার কাছে ৪ উইকেট ও আয়ারল্যান্ডের কাছে ৩৩ রানে ম্যাচ হারে তারা। অবশ্য লংকানদের বিপক্ষে জয়ের সুযোগ ছিল টাইগারদের। তবে আইরিশদের বিপক্ষে ১৭৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে তারা। ৭ উইকেটে ১৪৪ রান করতে পারে বাংলাদেশ।
আইরিশদের কাছে হার শুধু হতাশাজনক নয়, মনে করা হচ্ছে, বড় ধরনের মানসিক চাপে ফেলেছে বাংলাদেশকে। সৌম্য সরকার ও নুরুল হাসান সোহান ছাড়া আর কোনও ব্যাটসম্যানই তাদের ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। বোলারদের মধ্যে ভালো করেছেন তাসকিন আহমেদ। প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন তিনি। তবে হতাশ করেন আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের যোগদানে দলের শক্তি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। পিঠের ইনজুরিতে ভুগছেন মাহমুদউল্লাহ। আইপিএলে কলকাতার হয়ে খেলার কারণে দলের সঙ্গে শুরু থেকে থাকতে পারেননি সাকিব। গতরাতে শেষ হয়েছে আইপিএল।
ইতোমধ্যে ওমানে জাতীয় দলের জৈব-সুরক্ষা বলয়ে প্রবেশ করেছেন তিনি। আইপিএলের ফাইনালে তার দল হার মানে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আশানুরূপ ফল নেই বাংলাদেশের। ১১৩ ম্যাচ খেলে ৪১ ম্যাচ জিতেছে তারা। আর ৭০ ম্যাচ হেরেছে। দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
টাইগাররা এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপে ২৫টি ম্যাচ খেলেছে। মাত্র পাঁচটিতে জিতেছে। এর মধ্যে বাছাইপর্ব থেকেই চারটি জয় এসেছে। বাছাইপর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে তারা।
বাংলাদেশ স্কোয়াড
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটরক্ষক), শামীম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, রুবেল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, শেখ মেহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ ও তাসকিন আহমেদ।