ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অজয়ের চরে আটকে থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছে আউশগ্রামের ফতেপুরের শাজাহান খানের। তিনি বলেন, পানি বাড়ছে বুঝতে পেরেই ফিরতে চেয়েছিলাম। কিন্তু গরুগুলো ভয়ে চর থেকে নড়তে চাচ্ছিল না। তাদের বাঁচাতে গিয়েই ডুবতে বসেছিলাম! অজয় নদের এমন চেহারা আগে দেখিনি!
তিনি আরো বলেন, গাছের মগডালে বসেছিলাম। একটাতে আমি আর আমার মামা সামসুল খান, অন্য গাছে গ্রামেরই ফতেপুরের রাইফেল মণ্ডল বসেছিল। কাঁটাওয়ালা গাছের খোঁচায় হাত-পা কেটেছে আমাদের। যন্ত্রণা, খিদে-তৃষ্ণাও ভুলেছিলাম। শুধু অপেক্ষা, কেউ না কেউ আসবে।
তিনি আরো বলেন, রোজই আউশগ্রামের সোন্দলপুরে অজয়ের চরে গরু চরাই। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে খাবার, পানি নিয়ে তিনজন রওনা দিই। বাঁধ থেকে চর কিলোমিটার খানেক ভিতরে। বেলা ১১টা থেকে পানি বাড়ছিল। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই চর ডুবতে থাকে। রাইফেলের কাছে মোবাইল ছিল। বাড়ির লোককে সব জানায় সে। পানি বাড়ায় প্রাণ বাঁচাতে কাঁটা গাছে উঠি। গরুগুলো ভেসে যায়। পানি বাড়ে, আমরাও ডাল ধরে উপরে উঠতে থাকি। সন্ধ্যা নামে। মোবাইলের ব্যাটারিও শেষ। বারবার বউ, ছেলে-মেয়ের মুখ ভেসে উঠছিল।
তিনি আরো বলেন, পানির ধাক্কায় গাছ নড়ছে। পিঁপড়া কামড়াচ্ছে হাতে। রাইফেলের চিৎকার- গাছে তিনটা সাপ উঠেছে। গরু চরানোর লাঠি দিয়ে সাপ সরায় সে। শেষ বার যখন গ্রামের লোকের সঙ্গে কথা হয়েছিল, শুনেছিলাম, প্রশাসন উদ্ধারের ব্যবস্থা করছে। আর কত ক্ষণ! একটা আলো দেখতে পাই। কিন্তু কিছুটা এসে ফিরে যায় সেটা। পাঁচ-ছয় ঘণ্টা পরে ফের আলো। এ বার স্পিডবোট আসে। রাত ২টা নাগাদ পাড়ে ফিরি।