স্পোর্টস ডেস্ক: সমুদ্র শহর মালেতে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ ফুটবলীয় আসর ১৩তম সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। নতুন আসরে নতুন আশা নিয়ে মালদ্বীপে পাড়ি জমানো জামাল ভূঁইয়াদের সামনে প্রথম পরীক্ষার নাম শ্রীলঙ্কা।
এবারের সাফে বাংলাদেশ বাদে অংশ নিয়েছে নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভারত ও স্বাগতিক মালদ্বীপ। অংশ নেয়নি পাকিস্তান-আফগানিস্তান। পাঁচ দলের এই আসরে বাংলাদেশের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা একমাত্র দল এই শ্রীলঙ্কা। যদিও বা পরিসংখ্যানের হিসেবে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই খুব বেশি নিশ্চিন্ত থাকতে পারছে না অস্কার ব্রুজনের দল।
২০০৩ এ বাংলাদেশের মতো শ্রীলঙ্কাও সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে একবার। ১৯৯৫ সালে, তখন টুর্নামেন্টের নাম ছিলো সার্ক গোল্ড কাপ। সাফে তাদের রেকর্ডটাও খুব খারাপও নয়। ৩৭ ম্যাচে ১৩ জয়, ৬ ড্র ও ১৮ হার। ৪৬ গোল করে খেয়েছে ৫৯টি।
র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ (১৮৯) শ্রীলঙ্কার চেয়ে (২০৫) এগিয়ে থাকলেও গত পাঁচটি লড়াইয়ে সমান দুটি করে জয় দুই দলের। সব মিলিয়ে ১৭ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ১১ টি, শ্রীলঙ্কার ৪টি। এই ১৭ ম্যাচে লাল-সবুজের দল ২৭ গোল করার বিপরীতে হজম করেছে ১৩টি।
বাংলাদেশ দলে প্রবাসী ফুটবলার ২ জন হলেও লঙ্কা দলে ৪ জন। এই চারজনের মধ্যে একজন খেলেন ভারতের আই লিগে ও আরেকজন খেলেন সাফ স্বাগতিক মালদ্বীপেরই দিভেহী লিগে! তবুও সাফ শুরুর আগেই রাজ্যের হতাশা শ্রীলঙ্কার কোচ আমির আলাগিকের কণ্ঠে।
এবারের সাফে নিজেদেরকে আগেভাগেই সবার পেছনে রাখলেন তিনি। প্রস্তুতির অভাব, খেলোয়াড়দের প্রতিশ্রুতির অভাব- সব মিলিয়ে মোটেও আশাবাদী নন আলাগিক। তিনি বলেন, ‘ভালো অনুশীলন হয়নি আমাদের। প্রস্তুতি ম্যাচও খেলা হয়নি। ফুটবলাররা পেশাদার নয়, সবাই শৌখিন।’
টুর্নামেন্টে ভালো করার চেয়ে ৬১ বছর বয়সী এই কোচের মনোযোগ বেশি নতুন ফুটবলার খুঁজে বের করতে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড় আছে। আশা করি, এই টুর্নামেন্টে ওরা নিজেদের তৈরি করবে।’
এদিকে সাফ শুরুর কদিন আগে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেয়া অস্কার ব্রুজন জানিয়েছেন, র্যাঙ্কিংয়ের হিসেবে পিছিয়ে থাকলেও আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই দলের ভেতর। জামাল-তপুদের নিয়ে তাই এই ম্যাচে ভালো কিছু করার ব্যাপারে আশাবাদী প্রথমবারের মতো কোন জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়া এই কোচ।
ব্রুজন বলেন, ‘জানি গত তিন বছর এবং সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ ইতিবাচক ফল পাচ্ছে না। এটাও জানি, কেবল আমরা নই, শ্রীলঙ্কারও একই অবস্থা। তারাও চাইবে ভিন্ন কিছু চেষ্টা করে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে। তবে আমাদের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। সাফে প্রভাব রাখার জন্য প্রস্তুত আমরা।’
‘র্যাঙ্কিংয়ে আমরা নিচের দিক থেকে দ্বিতীয়, কিন্তু আত্মবিশ্বাসের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দলের একটি। এটা কেবল আমার বিশ্বাস নয়, সব খেলোয়াড়ের মধ্যে এই বিশ্বাস আমি অনুভব করছি।’- ব্রুজন যোগ করেন।
সাফে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সবশেষ বাংলাদেশের দেখা হয়েছিল ২০০৯ সালে। সেবার এনামুল হকের জোড়া গোলে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। দুই দলের সবশেষ দেখা ২০২০ সালে, বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে। মতিন মিয়া ও মোহাম্মদ ইব্রাহিমের নৈপুণ্যে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ।