বিশেষ প্রতিনিধি, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ইং, এইউজেডনিউজ২৪: যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনে সারা বাংলার যুব সমাজ আনন্দে উচ্ছ্বেসিত। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মনি যুবলীগ গঠন করেন ১৯৭২ সালে। বঙ্গবন্ধু শেখ মনির মাঝে খুঁজে পেয়েছিলেন যুব নেতৃত্বের অসাধারন সব গুনাবলী। বঙ্গবন্ধু যুবলীগ গঠন করেন, স্বাধীন বাংলাদেশের যুবকদের সুগঠিত করে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে ঢেলে সাজাতে। যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেশকে আর্থসামাজিক ভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে। কিন্তু ১৫ই আগষ্টের একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের আক্রমনে বঙ্গবন্ধু ও শেখ মনি সহ অনেকে শাহাদাত বরন করেন। যে ঘঠনার কারণে বাংলার মানুষ স্থবির বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। মানুষ নির্বাক হয়ে যায়। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বাঙ্গালি দিশে হারা হয়ে পরে। ১৯৮১ সালের বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলার দুঃখি মানুষের আলোকবর্তিকা হয়ে দেশে আসেন। সেদিন বাংলার মানুষ প্রাণ ফিরে পাই। বাংলা মা জননি তার হারানো বঙ্গবন্ধুর রক্তকে ফিরে পাই। প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর দুঃখি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে ক্ষুধা দারিদ্র মুক্ত করতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের হাল ধরেন, হাল ধরেন বঙ্গবন্ধুর নৌকার। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সহ সকল অঙ্গসংগঠনকে উজ্জীবিত করে দেশের কাজে মনোনিবেশ করেন। দীর্ঘদিন স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করে পতন ঘঠিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধার করেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে সুক্ষ্ম কারচুপির কারণে ক্ষমতায় আসতে না পারলেও ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলার মানুষের ভালবাসায় বঙ্গবন্ধুর বাংলার মানুষের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হোন। তারপরেই দেশে ন্যায়বিচার এবং আইনের সমতা সৃষ্টি হয়। এবং দেশে প্রকৃত উন্নয়ন শুরু করেন। মানুষ ভাবতে লাগল দেশ ২য় বারের মত মুক্ত হল। ২০০১ সালে তিনি কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচন দেন। সে নির্বাচনে আবার স্থুল কারচুপির মাধ্যমে পরাজিত হোন। তারপর আবার ২০০৮ সালে জনগণের ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেন। আজও তিনি চতুর্থবারের মত ক্ষমতায় রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু দলের মাঝে অনুপ্রবেশ ঢুকে দলের অনেক ক্ষতি করে ফেলে। উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। তিনি শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে সকল সংগঠনকে আবার ঢেলে সাজাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কমিটিতে চেয়ারম্যান করেছেন করেছেন শেখ ফজলে শামস পরশকে। যিনি যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের বড় পুত্র। তিনি একজন অধ্যাপক এবং সুন্দর মনের মানুষ। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক করেছেন দীর্ঘদিনের পরিক্ষিত যুব সমাজের আইকন যুবলীগের ঢাকা মহানগরের দীর্ঘদিন নেতৃত্বদানকারী সবার প্রিয় যুব নেতা মাঈনুল হোসেন খান নিখিল। তিনি প্রথমে সাংগঠনিক ছিলেন পরে সাধারণ সম্পাদক,তারপরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তাকে প্রিয় নেত্রী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে প্রত্যাশায় তাদের দুজনকে দায়িত্ব দিয়েছেন সে প্রত্যাশার কথা দুজনই প্রকাশ করেছেন এই বলে যে – প্রিয় নেত্রীর যে প্রত্যাশা নিয়ে আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন তা যেন সঠিক ভাবে পালন করতে পারি। চেয়ারম্যান সাহেব ইতোমধ্যে বলেছেন- ‘ I hate politics ‘ এমন ধারনা থেকে যুব সমাজকে বের করে আনতে হবে। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে কি কি প্রত্যাশা তারা পালন করবেন? প্রিয় নেত্রীর মত আমাদেরও প্রত্যাশা অনেক। আমরা যে প্রত্যাশা করি পরশ ভাই ও নিখিল ভাইয়ের কাছে তা হল- ১. প্রথমেই বিগত কমিটিতে যারা লেনদেনের মাধ্যমে নেতা হয়ে ছিল, তাদের খুজে বের করে পুনরায় পরিক্ষিত ক্লিন ইমেজের কর্মী দিয়ে কমিটি গঠন। ২. মাদকাশক্ত নেতা বাদ দিয়ে ভাল কর্মী দিয়ে কমিটি গঠন। ৩. সারা বাংলায় সন্ত্রাসী ও নেশাখোরদের বাদ দেয়া। ৪. ত্যাগী ও পরিক্ষিত আওয়ামী পরিবারের ছেলেদের মুল্যায়ন করা। ৫. যুব সমাজের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা। ৬. প্রতিটি ইউনিয়র পর্যায়ে যুবলীগের নেতৃত্বে ট্রেনিং সেন্টার খোলা,যেখানে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষন নিয়ে যুবকরা দেশে অথবা বিদেশে কাজ করে অবদান রাখবে দেশের অর্থনীতিতে। ৭. শিক্ষিত মানবিক যুবকদের দিয়ে কমিটি করতে হবে। ৮. প্রতিটি কমিটিতে একটি মানব সম্পদ উন্নয়ন পদ থাকবে তার কাজ হবে, কি করে মানুষকে কর্মসংস্থানে সহায়তা করা যায়। শুধু পদ নয় কাজ করতে হবে। শুধু দলের মিছিল মিটিং করাই যুবলীগের কাজ না,তারা যেন সমাজের অার্থসামাজিক ভুমিকায় অবদান রাখে। ৮. প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পর্যায়ে মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে যুবলীগ ক্লাব গঠন করবে। কোন ছেলেটা মাদকগ্রহন করে তাকে চিহ্নিত করে ভাল পথে আনবে। ৯. খেলাধুলার সকল ব্যবস্থা গ্রহন করবে।খেলাধুলার মাধ্যমে যুব সমাজকে মাদক থেকে দুরে রাখবে। ১০. যে ছেলেটা পড়াশুনায় ভাল তাকে সকল প্রকার সহযোগিতা করবে। যারা পড়াশুনার জন্য সহোগিতা চাই তাদেরকে সাহায্য করতে হবে। ১১. জঙ্গী ও সন্ত্রাস মোকাবেলায় ওয়ার্ড পর্যায়ে সেল গঠন করতে হবে। ১২. অধিকতর মেধাবিদের দিয়ে কমিটি করতে হবে। যেখানে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নেতাদের গুরুত্ব দেয়া হবে। ইত্যাদি আরো যত ভাল দিক রয়েছে তা গ্রহন করা যেতে পারে।
সর্বোপরি একটি মানবিক সমাজ গঠনে বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ করবে। মোট কথা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন, বঙ্গবন্ধু আদর্শের কর্মী দিয়ে এবং শ্রদ্ধেয় শেখ মনির যে উদ্দেশ্য নিয়ে যুবলীগ গঠন করে ছিলেন তার প্রতিলন ঘটাতে হবে। প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার দেশ উন্নয়ন চিন্তার প্রতিফলন গঠাতে পারে এমন নেতা দিয়েই যুবলীগের সকল ইউনিট সাজাতে হবে। ” যুবলীগের মুলমন্ত্র বেকার মুক্ত গণতন্ত্র “
কাজী আনিসুর রহমান তৈমুর
সাবেক উপ-মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ kazitaimur@yahoo.com