রাজধানী ডেস্ক: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর লকডাউনে বিধিনিষেধ মানা নিশ্চিত করতে সারাদেশে পাড়া-মহল্লায় বিশেষ অভিযান চালাবে র্যাব। রাজধানীর ধানমন্ডির রাসেল স্কয়ার মোড়ে শনিবার দুপুরে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, শাটডাউনে মূল সড়কগুলোতে মানুষের অযথা চলাচল কম থাকলেও পাড়া-মহল্লায় দিনভর জটলা লেগে থাকে। এমন বাস্তবতায় দেশজুড়ে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে র্যাব। রাসেল স্কয়ারে লকডাউনে র্যাবের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে ব্রিফ করেন খন্দকার আল মঈন।
এতে তিনি বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও যারা বাইরে বের হচ্ছেন তাদের অনেকেই সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করছেন না। তাদের সচেতন করার পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
খন্দকার আল মঈন জানান, বিধিনিষেধ মানাতে র্যাব এখন পর্যন্ত সারা দেশে ৪ শতাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে জরিমানা করা হয়েছে চার লক্ষাধিক টাকা। দেশজুড়ে নিয়মিত টহল ও চেকপোস্টের বাইরে চার শতাধিক অতিরিক্ত চেকপোস্ট পরিচালনা করে যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পাড়া-মহল্লায় টহলের বিষয়ে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘পাড়া-মহল্লায় টহল পরিচালনা করার সময় দেখেছি, অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। বিভিন্ন স্টলে-দোকানে গণজমায়েত দেখা গেছে। ‘তাই সবার প্রতি অনুরোধ, পরিবারের কথা বিবেচনা করে হলেও এই ক’টা দিন করোনার ঝুঁকিপূর্ণ সময়টাতে ঘরে থাকুন। অন্যথায় আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিবো।’
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি এখানে আসার আগে ১০টি চেকপোস্ট পর্যালোচনা করেছি; পাড়া-মহল্লায় গিয়েছি। আপনারা যথার্থই বলেছেন, পাড়া-মহল্লায় অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। ‘আজ থেকে পাড়া-মহল্লায় স্পেশাল অভিযান পরিচালনা করা হবে। সম্মানিত নাগরিকদের অনুরোধ করব, পাড়া-মহল্লায় আপনারা জমায়েত হবেন না।’
গত দুই দিনের লকডাউনে র্যাব পরিচালিত অভিযান নিয়ে তিনি বলেন, প্রথম দিন সারা দেশে ১৮২ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর জরিমানা করা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, শুক্রবার সারা দেশে ২২০ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি জরিমানা করা হয়েছে আড়াই লক্ষাধিক টাকা। গত দুই দিনের মধ্যে শুক্রবার চেকপোস্ট বেশি ছিল। যারা নির্দেশনা মানছেন না, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন বিশেষ পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে লকডাউন দেওয়া হয়েছে। যারা জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছেন, তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করছি। ‘অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ করছি।’ করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশে পয়লা জুলাই থেকে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন, যা পরিচিতি পেয়েছে শাটডাউন হিসেবে। এ শাটডাউন চলবে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত।
এ বিধিনিষেধে জরুরি পরিষেবার দপ্তর ছাড়া বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি সব কার্যালয়। শাটডাউন বাস্তবায়নে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। প্রথম দিনে বিধিনিষেধ অমান্য করার অভিযোগে ৫৫০ জনকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বিধিনিষেধ মানা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও সেনা সদস্যরা সড়কে তৎপরতা চালাচ্ছে।