অর্থনীতি ডেস্ক, আজনিউজ২৪: করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প। এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণের ক্ষেত্রেও নানা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা জারি করেছে। যার ফলে ব্যবসা হারাচ্ছে পর্যটন সংস্থাগুলো। এতে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পর্যটনশিল্প। করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের পর বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প অভ্যন্তরীণ পর্যটনের মাধ্যমে কিছুটা ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টায় ছিল, কিন্তু করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে দেশের পর্যটনশিল্প আবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ল।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের সবচেয়ে বড় সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পে করোনাভাইরাসের প্রভাব এর থেকে দ্রুত উত্তোরণে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। অনুষ্ঠানের সভাপতি ও পরিচালনায় ছিলেন টোয়াবের সভাপতি ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের গভর্নিং বডি মেম্বার মো. রাফেউজ্জামান।
মো. রাফেউজ্জামান বলেন, গত বছরের করোনার কারণে পর্যটনের সঙ্গে জড়িতদের সম্মিলিত ক্ষতির পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। শুধু টোয়াব সদস্যদের ক্ষতি হয়েছে পাঁচ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের মার্চ থেকে সব কিছু স্থবির হওয়ায় পর্যটন খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়ছে। জুন পর্যন্ত করোনার এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ট্যুর অপারেটরদের ক্ষতি হবে প্রায় ছয় হাজার ৮০০ কোটি টাকা। চলমান পরিস্থিতি আগামী ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত বর্ধিত হলে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা হতে পারে।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন টোয়াবের পরিচালক (গণমাধ্যম ও প্রকাশনা) মোহাম্মদ সাহেদ উল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন টোয়াবের পরিচালক (অর্থ) মো. মনিরুজ্জামান মাসুম, টোয়াবের পরিচালক (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক) মোহাম্মদ হানিফ, টোয়াবের পরিচালক (বাণিজ্য ও মেলা) মো. আনোয়ার হোসেন, টোয়াবের পরিচালক প্রফেসর মো. আব্দুর রউফ, মোহাম্মদ সজিবুল-আল-রাজীব ও সৈয়দ শাফাত উদ্দিন আহমদ তমাল।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘সীমিত পরিসরে হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে পর্যটকের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি লকডাউনের কারণে বন্দিদশা থেকে মানসিক প্রশান্তির জন্য হোটেল-রিসোর্টগুলোও খুলে দেওয়া যেতে পারে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, টোয়াবের নেতারা একটি পরিকল্পনা তৈরি করে সরকারের যথাযথ মহলে উপস্থাপন করবেন।
টোয়াবের সভাপতি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য দেন টোয়াবের প্রথম সহসভাপতি শিবলুল আজম কোরেশী। পর্যটনের জন্য সরকারের কাছে একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয়ের দাবি জানান তিনি।
সূ্ত্র: কালের কণ্ঠ