পলিটিক্যাল ডেস্ক, আজনিউজ২৪: কৈশোরের দুরন্তপনায় যখন হাসি, আড্ডায় মেতে উঠার বয়স সেই সময় মন দিয়েছিলাম অবিনশ্বর আবেগের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগে। সাবেক হয়েছি বহুবছর হয়ে গেছে৷ এখনো শিক্ষা শান্তি প্রগতির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমায় টানে। একাকী, অবসরে ফেলে আসা বিদ্রোহী স্লোগান, বিরোধী দলের মিছিলে জীবন্ত ব্যারিকেড হয়ে দাঁড়ানোর গল্প মনে পড়ে যায় এই অবেলায়!
সময় কত দ্রুত চলে যায়। মাঝেমধ্যে খুব একাকীত্ব যখন ঘিরে ধরে আমায়। আমি আমার স্মৃতি খুঁজে ফিরি৷ জীবনের কৈশোর, তারুণ্যের মূল্যবান সময়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, শেখ হাসিনা এর বাইরে আর কিছু পুরোপুরি ধারণ ও লালন করতে পেরেছি কিনা আমি জানিনা।
সরকারের ৩ টার্ম ক্ষমতায়৷ ৩ মেয়াদে দীর্ঘদিন সরকার ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগের নাম নিয়ে, ব্যানার লাগিয়ে অনেক অরাজনৈতিক লোকজন বিভিন্ন পদে যাওয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা, বিভিন্ন জায়গায় জনপ্রতিনিধি হবার জন্য দাঁড়িয়ে! এইসব দেখতে দেখতে মুচকি হাসি উঠে আসে ঠোঁটের কিনারায়! আর স্মৃতি ভেসে উঠে কত গুলো সংগ্রামী দিনের! যেখানে রোজ প্রতিবন্ধকতা ছিল পুলিশের সাথে, তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বিএনপির ক্যাডার, ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।
লিখাটা লিখতে গিয়ে বহুদিনের পুরানো ক্ষতের দুর্বিষহ স্মৃতি আর যন্ত্রণা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে! যেদিন বিএনপি, জামাত জোটের সন্ত্রাসীরা আমার প্রিয় নেত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল৷ সেই গ্রেনেডের স্প্রিন্টারের আঘাত বহনকারী আমার শরীরের পুরানো ক্ষত মাঝেমধ্যেই দাপিয়ে বেড়ায় শিরা উপশিরায়। এক সময় ব্যাথার যন্ত্রণার ক্লান্তি ভুলে আমি ঘুমিয়ে যায়।
কিন্তু ৩ মেয়াদের সরকারের ক্ষমতায় দুর্দিনের কর্মী হিসেবে যারা রাজপথে মাঠে ছিল, তাদের ভাগ্য বঞ্চিত হবার কাহিনি গুলো মনে হলে, এই অসহনীয় যন্ত্রণা, ক্লান্তি এটা ভুলে থাকা যায় না! এই নিরব ক্ষত সুপ্ত হয়ে আত্মায় সেঁটে আছে। বারবার জাগ্রত হয়। প্রতিনিয়ত প্রশ্নবিদ্ধ করে!
আওয়ামী লীগের দুর্দিনে, বিরোধী দলে আমরা যখন মাঠের কর্মী হিসেবে মমতাময়ী আপার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলাম তখন এত ভীড় ছিল না৷ মিছিলের মানুষ গুলোর নাম চাইলেই বিশেষ ভাবে লিপিবদ্ধ করে তাদের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ে সম্মিলিত ভাবে কাজ করা যায়। অথচ আমরা কি দেখি?
– বিরোধী দলে জীবন যৌবনের পুরোটা দিয়ে যারা অক্লান্তভাবে কাজ করেছিল তাদের রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে রাজনীতিতে দাঁড় করানো হয় বুর্জোয়াদের।
যে জীবন রাজনীতির, যে জীবন নিঃস্বার্থভাবে আপার জন্য ভাই হয়ে কাজ করার। সেই জায়গায় স্বার্থের উর্ধ্বে আজীবন, অকাতরে হাসি মুখে সব সহ্য করার সাহস নিয়েই পথ চলতে পারি। মমতাময়ী, বঙ্গবন্ধু তনয়া, শেখ হাসিনা আমার অনুপ্রেরণা। ভয় কিসের?
পাওয়া না পাওয়ার হিসাব করতে বসলে অনেক আগেই রাজনীতি থেকে দূরে চলে যেতাম। তবুও মনে পড়ে৷ স্মৃতি নিয়ে যায় সেই দূর বিকেলে হিংস্র জামাত বিএনপির তান্ডবলীলার সামনে দাঁড়িয়ে রোজ আন্দোলন, সংগ্রাম, মিছিল করার দুঃসাহসিকতার ভীড়ে।