ন্যাশনাল ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: সারাবিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব নাগরিককে সরকারি নথিভুক্ত করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এ নথিভুক্তের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। প্রকল্প পরিচালকের আশ্বাস, জনশুমারি প্রকল্প এবার থাকবে অত্যাধুনিক তদারকির আওতায়। কাগজ কলমে গণনা আর নাও হতে পারে, উল্লেখ করে খরচ আর সঠিক ফলাফল পেতে সতর্ক থাকার নির্দেশ পরিকল্পনামন্ত্রীর। যদিও পরিসংখ্যানবিদরা মনে করছেন, উন্নয়ন পরিকল্পনার স্বার্থই শুধু নয়, এই প্রকল্পের সফলতার উপর নির্ভর করছে এসডিজি অর্জনও।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৪০ লাখ। কিন্তু ১০ বছরের গড় বৃদ্ধি পর্যালোচনায় সরকার মনে করে তা এখন ১৬ কোটি। তবে পত্রপত্রিকা আর রাজনৈতিক আলাপনে বরাবরই অনুপস্থিত প্রকৃত সংখ্যা, কখনো ১৭, ১৮ কিংবা বলা হয় ২০ কোটিও।
১৯৭৪ সালে শুরুর পর এখন পর্যন্ত মোট ৫ বার আদমশুমারি করা হয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু প্রতিবারই এই গণনার বাইরে থেকে গেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা, প্রকৃত জনসংখ্যা নিয়েও থেকে গেছে এক ধরনের বিতর্ক। ৬ষ্ঠ জনশুমারি প্রকল্পে এবার সে বিতর্কের অবসান চায় সরকার। বহু প্রথমের শুমারিতে, মূল গণনার আগেই করা হবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা, অংশ নেয়া যাবে অ্যাপসের মাধ্যমেও।
জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জাহিদুল হক সরদার বলেন, কেউ যদি ফাঁকিবাজি করার চেষ্টা করে তবে সেটা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে আমরা ধরতে পারবো। এবারই প্রথম বিদেশে যে বাংলাদেশিরা আছেন, তাদের অন্তর্ভূক্ত করা হবে। পাশাপাশি বিদেশি যারা আমাদের দেশে থাকেন, তাদেরকেও গণনায় আনা হবে।
প্রায় ১৮শ কোটি টাকার প্রকল্প, তাই অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা আর গণনার ফলাফলে কোন বিতর্ক চায় না সরকার, বলছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। যদিও, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন আর অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিশ্বাসযোগ্য পরিসংখ্যানের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, সুপারভিশন থেকে শুরু করে যিনি ডাটা সংগ্রহ করবেন সেই পর্যন্ত আমি মনে করি দক্ষ জনবল থাকা দরকার। কারণ এরমধ্য দিয়ে এসডিজি বাস্তবায়নও চলে আসবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমার তো মনে হয় আগামী ১০ বছর পর আমাদের আর শুমারি করার দরকারই হবে না। হয়তো এটাই আমাদের শেষ জনগণনা।
২০১৯ এর অক্টোবরে একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পের মেয়াদ জুন ২০২৪ পর্যন্ত। যেখানে মূল গণনা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে ২০২১ সালের ২ থেকে ৮ জানুয়ারি, ৭ দিনই ২৪ ঘণ্টা চলবে।