বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: সিলিকন ভ্যালী বা সাইবার জায়া এর আইডিয়াকে মাথায় রেখে সারাদেশে ২৮টি হাইটেক পার্ক/ সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক/ IT training & Incubation centre প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি ইতোমধ্যে অপারেশনে গেছে, অন্য গুলোর কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এখানে তরুণ তরুণীদের আইটি প্রশিক্ষণ ও কাজ দেয়া এবং দেশী বিদেশী আইটি বেজড প্রতিষ্ঠানকে ইনভেস্ট করার সুযোগ দেয়া হয়। ওয়ান স্টপ সার্ভিস এর মাধ্যমে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, নেটওয়ার্ক ইত্যাদি সুবিধাও দেয়া হচ্ছে। আরও থাকছে–পার্ক ডেভেলাপারের জন্য ১২ বছর পর্যন্ত পর্যায় ভিত্তিক ট্যাক্স মওকুফ, আইটি পন্য রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ট্যাক্স কওকুফ। ১০ বছরের জন্য আয়কর মওকুফ ইত্যাদি। এছাড়া বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১০০% মালিকানার সুযোগ। জমি বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প শুল্ক ছাড় দেয়া হচ্ছে। এগুলো প্রতিষ্ঠা হলে আশা করা যায় বাংলাদেশে ২৮টি মিনি সিলিকন ভ্যালী তৈরী হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।“
এই আইডিয়াকে সামনে রেখে ২০১০ সালের আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ হাই টেক কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনিক ও জনবল কাঠামোতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক ২ জন, উপ-পরিচালক ৪ জন সহ মোট অনুমোদিত জনবল রয়েছে ৭৬ জন । বর্তমানে এমডি এর দায়িত্ব পালন করছেন মিজ হোসনে আরা বেগম এনডিসি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লেডিস এমপাওয়ারমেন্ট এর অনন্য সাধারন উদ্যোগের মধ্যে একটি হলো স্বনামধন্য এই শিক্ষিতা কর্মকর্তাকে দুই বছর নিয়মিত চাকুরীর পরে পর পর চার বছর এই প্রতিষ্ঠানকে সেবা করার সুয়োগ দেয়া।। সরকারের একজন চৌকশ যুগ্মসচিব হাইটেক বিশেষঞ্জ জনাব এ এন এম সফিকুল ইসলাম ও চটপটে মিজ ফাহমিদা আখতার পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। পেছন থেকে পুরোটাই গাইড করছেন মাননীয় মন্ত্রী জনাব জুনায়েদ আহমেদ পলক। এই অফিসটিও আগারগায়ে আইসিটি টাওয়ারের ১০ ও ১১ তলায়। অনিন্দ সুন্দর সাজানো- দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়।
আর যারা হাইটেক পার্কে পরিশ্রম সহ অবদান রাখছেন অর্থাৎ পিডি হিসেবে পার্কগুলোকে আলোর মুখ দেখাচ্ছেন তারা হলেন : দেশ বিদেশে উচ্চ শিক্ষা নেয়া ব্যারিস্টার গোলাম সারওয়ার ভূইয়া, প্রশাসনিক অভিঞ্জতা সম্পন্ন জনাব মোস্তফা কামাল, ধীরস্থির শান্ত প্রকৃতির একেএম ফজলুল হক, স্থপতি জনাব গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ জহুরুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যাবলি
• বাংলাদেশে বিনিয়োগ অবকাঠামো হিসেবে হাই-টেক পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন;
• প্রতিষ্ঠিত পার্কের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা;
• পার্কে বিশ্বমানের বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণ;
• বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্টকরণ;
• এই সেক্টরে বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন;
• সরকারি হাই-টেক পার্কের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে হাই-টেক পার্ক ও সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন উৎসাহিত করণ;
• হাই-টেক সেক্টরের জন্য বিভিন্ন ফিসক্যাল, নন-ফিসক্যাল প্রণোদনাসহ বিনিয়োগের উপযুক্ত পলিসি, গাইডলাইন ও আইন প্রণয়ন;
• বিভিন্ন পার্কে স্টার্ট আপদের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিশ্চিতকরাসহ দেশে উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তোলা;
• হাই-টেক পার্ক বাস্তবায়নে বোর্ড অব গভর্নরস, নির্বাহী কমিটি, ডিজিটাল টাস্কফোর্সসহ বিভিন্ন জাতীয় কমিটির নির্দেশনা বাস্তবায়ন;
কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি:
সৌভাগ্য গাজীপুর জেলার, কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি বাংরাদেশে এক অপার সম্ভবনাময় সুযোগ তৈরী করেছে। ঢাকা থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার উত্তরে ৩৫৫ একর জমিতে এর ফ্লাগশিপ কর্মযঞ্জ চলছে। এখানে কমপক্ষে একলক্ষ তরুনের কর্মসংস্থান হবে। স্বল্প মূল্যে এর স্পেস মাস ভিতিতে ভাড়া দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ২৯ টি দেশী বিদেশী আইটি প্রতিষ্ঠান এখানে বিনিয়োগ করেছে। দেশের গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষনের জন্য জাতীয় ফোরটায়ার ডাটা সেন্টারও রয়েছে এই ক্যাম্পাসে। সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান যে কেউই এখানে স্বল্প খরচে ডাটা রাখতে পারে।
শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কঃ
যশোর জেলায় শহরের ২.৫ কিমি পূর্বে ১২ একর জমির উপর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। এই অত্যাধুনিক ও সুন্দর ভবনে ৫০০০ জনের কর্মসংস্থান হবে। ইতোমধ্যে ৪৮ সফটওয়্যার ও বিপিও কোম্পনীকে স্পেস বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। সার্কিট হাউজ বা সরকারী ডাকবাংলো যাদের ভালো লাগে না এখানকার ৪ তারকা আবাসন সুবিধা তারা নিতে পারেন।
জনতা টাওয়ার সফটওয়ার টেকনোলোজি পার্ক : ঢাকার কারওয়ান বাজারস্থ জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ১৪ টি আইটি / আইটিইএস কোম্পানী ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ১২ তলা ভবনে স্টার্ট আপ কোম্পানী সহ ২৪টি প্রতিষ্ঠান ইনভেস্ট করেছে এবং সরাসরি ১০৫০ জনের কর্মস্ংস্থান হয়েছে। সফটওয়ার কোম্পানি গুলো এখানে ব্যবসা শুরু করেছে আর শুরুতেই সরকার ৪ কোটি টাকা আয় করেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক, রাজশাহী ঃ শহরের উপকন্ঠে পবা উপজেলায় ৩০ একর জমিতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক, রাজশাহী’ নামে একটি পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। রাজশাহী বিমান বন্দর থেকে ৮ কিলো মিটার দুরে পদ্মার ধারে দৃষ্টি নন্দন ১০ তলা মাল্টিপারপাস ভবনে ১৪ হাজার কর্মসংস্থানের টার্গেট নিয়ে প্রকল্পটি দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এই পার্কের ভিতরেই ৫তলা শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর এন্ড ট্রেনিং সেন্টারও তৈরী করা হয়েছে। সব মিলে এখানে রাজশাহী বাসীর জন্য তৈরী হবে আইটি হাব।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই টেক পার্ক, সিলেট :
৫০ হাজার কর্মসংস্থানের লক্ষ্য মাত্রা নিয়ে দৃষ্টিনন্দন ৩ তলা আধুনিক ভবন তৈরী হচ্ছে সিলেট শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার উত্তরে বিখ্যাত দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্র বিছানা কান্দির কাছেই এই বিশাল কর্মযঞ্জ চলছে।। এখানে দেশী বিদেশী বহু প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান
যুগ্ম সচিব
আইসিটি মন্ত্রণালয়
আইসিটি ভবন
আগারগাঁও ঢাকা।