ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: চীনের উইঘুর সম্প্রদায়কে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের নামে জোরপূর্বক জন্ম নিয়ন্ত্রণে বাধ্য করছে চীন সরকার। শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিম নারীদের জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হয়। বার্তা সংস্থা এপির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এসব তথ্য। বেশি সন্তান থাকায় আটকও করা হচ্ছে। সরকারি তথ্য, রাষ্ট্রীয় নথি বিশ্লেষণ আর বন্দী শিবির থেকে ছাড়া পাওয়া প্রায় অর্ধশতাধিক উইঘুরের স্বাাতকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করে এপি।
যদিও এসব অভিযোগকে মিথ্যা বলছে চীন সরকার। উইঘুর জাতির ইতিহাস প্রায় চার হাজার বছর আগের। এরা মূলত তুর্কি বংশোভূত। সাংস্কৃতিক দিক থেকে তুর্কি ও আরবি প্রভাবিত। চীনের শিনজিয়াংয়ে প্রায় দেড় কোটির মতো উইঘুরের বসবাস। চীনে দীর্ঘদিন ধরে নানা নিপীড়িনের শিকার তারা। জাতিসংঘের হিসেবে, সংশোধনের নামে, ১০ লাখের মতো উইঘুর মুসলিমকে বন্দী শিবিরে আটকে রেখেছে চীন। এরআগে, জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ২০১৪ সালে এক সন্তান নীতি চালু করে চীন সরকার। তবে বয়স্কদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পরে শিথীল করা হয় এ নীতি।
উইঘুর মুসলিমদের অভিযোগ, প্রশাসনের ভয়ে তারা এতোটাই ততস্থ হয়ে থাকেন যে, সন্তান নিতেই ভয় পান অনেকে। গেল বছর সারা দেশে জন্মহার চার দশমিক দুই শতাংশ কমলেও; শিনজিয়াং প্রদেশেই কমেছে, ২৪ শতাংশ। আর উইঘুর অধ্যুষিত হোতান আর কাশগার প্রদেশে ৩ বছরে কমেছে, ৬০ শতাংশ।
জুমরেত দাউত বলেন, ‘বেশি সন্তান থাকায় আমাকে বন্দীশালায় নিয়ে যাওয়া হয়। জোর করে আমার স্টেরিলাইজেশন অপারেশন করা হয়। যেন চাইলেও সন্তানের মা হতে না পারি। তারা আমাদের শেষ করে দিতে চায়। জানে মেরে ফেলতে পারছে না তাই কৌশলে, ধাপে ধাপে নিঃশ্বেষ করে দিচ্ছে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, কঠিন পরিকল্পনা আর কৌশল খাটিয়ে উইঘুর মুসলীমদের নিয়ন্ত্রন করছে চিনপিং সরকার। একে ডেমোগ্রাফিক জেনোসাইডও বলছেন অনেকে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক আদ্রিয়ান জেন বলেন, ‘খুব কৌশল খাটিয়ে উইঘুর মুসলীমদের দমন করা হচ্ছে। জন্মহার কম থাকলে তাদের নিয়ন্ত্রনে রাখা সহজ হবে, সেইসাথে বহির্বিশ্বের চোখও ফাকি দেয়া যাবে তাই এই পথে হাঁটছে চীন সরকার। জাতিসংঘের কনভেনশন অনুযায়ী এটি পরিস্কারভাবে গণহত্যার সামিল।’