
আইন ও আদালত ডেস্ক, আজনিউজ২৪ঃ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় দুটি মামলার তিন আসামি বাদল, কালাম ও সাজুকে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
শনিবার (১০ অক্টোবর) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মাঈন উদ্দিন নামের এক আসামি। এদিকে ষষ্ঠ দিনও ধর্ষক ও নির্যাতনকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে নোয়াখালীতে।
সকালে পিবিআইয়ের নোয়াখালী ইন্সপেক্টর মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী আসামিদের নিয়ে একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বাড়িতে যান। এসময় পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। পিবিআইয়ের কর্মকর্তাগণ ওই বাড়িতে প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো অবস্থান করে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বসত ঘর ও আশপাশ ঘুরে দেখেন। তবে এসময় তারা গণমাধ্যমের সাথে কোন কথা বলেননি।
এদিকে, নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, দুপুরে গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার মাঈন উদ্দিনকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২নং আমলী আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের জ্যেষ্ঠ হাকিম এস এম মোসলে উদ্দিন মিজান ১৬৪ ধারায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে ষষ্ঠ দিনেও ধর্ষক ও নির্যাতনকারীদের বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও শিল্পী সমাজ নোয়াখালী, বেগমগঞ্জ উপজেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা, কোম্পানীগঞ্জ চরপাবর্তী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ’সহ বিভিন্ন সংগঠন।
এদিকে ৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে গৃহবধূর দায়ের করা নির্যাতন ও পর্ণগ্রাফি মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে ৫ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওই নারীর সাথে তার স্বামীর তালাক না হলেও বেশ কিছুদিন ধরে তারা আলাদা থাকতেন। গত ২ সেপ্টেম্বর একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে তার বাড়িতে আসেন স্বামী। এ বিষয়টি দেখেন স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে। অনৈতিক কাজ ও তাকে কুপ্রস্তাব দেয়, রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে। ৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলায় তথা দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন অস্ত্র মামলায় রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সূত্রঃ সময় টিভি