এডুকেশন ডেস্ক: ৫০ বছরের পথচলায় বিনামূল্যে বই বিতরণে অনন্য রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। নতুন বছরের নতুন সূর্যোদয়ে আনকোরা বই হাতে কচি মুখের হাসি। এভাবে বছরের প্রথম দিন কোটি কোটি শিশুর হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারা, অর্ধশতাব্দির পথচলায় বাংলাদেশের এক অনন্য অর্জন।
স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রথম বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ শুরু হয় ১৯৮৩ সালে। সেটাও শুধু প্রাথমিকের অর্ধেক বই। নতুন-পুরোনো মিশেলের সেই বই হাতে পেতেও অপেক্ষা করতে হতো মাস দুয়েক।
তবে, ২০১০ থেকে শতভাগ নতুন বই দেয়া শুরু হয় বছরের প্রথম দিনেই। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে বইয়ের সংখ্যা। এক যুগ ধরে তাতে লেগেছে উৎসবের রং।
অর্ধযুগ ধরে বই উৎসব হয়েছে সার্বজনীন। ৫ নৃগোষ্ঠীর ভাষার বই উৎসবের রংয়ে দিয়েছে নতুন মাত্রা। চাকমা, মারমা, গারো, ত্রিপুরা আর সাদ্রী শিশুদেরও হাতেখতি হয় তাদের মায়ের ভাষাতেই।
এবার ৫০ এর বাংলায় বঞ্চিত নয় দৃষ্টিহীনও। প্রতিবন্ধকতার অন্ধকার পথে দিশারী হয়েছে সরকারের বিনামূল্যের ব্রেইল বই।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রযুক্তি উদ্যোক্তা আশিকুর রহমান অমিত বলেন, লাল সবুজের অগ্রযাত্রায় সরকারের এই কার্যক্রমে একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে একসাথে একই শ্রেণীকক্ষে পরতে পারছে।
৭১এ স্বাধীন দেশে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে সাক্ষর দিতে পারতেন ১৭ জন। ৩৯ বছর পর বই বিতরণ শুরু হলে, সাড়ে চারগুণ বেড়ে সাক্ষরতার হার এখন ৭৮ শতাংশ।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ২০২১ পর্যন্ত প্রায় ৩৬৫ কোটি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিবছরই ৪ কোটির এশি শিক্ষার্থী থাকে। বিশ্বের আর কোথাও এত বিপুল পরিমাণের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করে না।
অর্থনীতি, বাণিজ্য অথবা কৃষি বিপ্লব- সব অর্জনে, ৫০ এর অগ্রযাত্রার পেছনের কারিগর শিক্ষা। আর এপথে সবচেয়ে বড় অবদান সরকারের বিনামূল্যের বই।