ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: ২০১৮ সালে ব্লাসফেমির মামলায় খ্রিস্টান নারীকে খালাস দেয়ার কারণে সহিংস সমাবেশে অংশ নেয়ায় পাকিস্তানের আদালত একটি ইসলামপন্থী দলের ৮৬ জনকে ৫৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বলে শুক্রবার দলটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এ মামলাটির রায় ইসলামাবাদের নিকটবর্তী গ্যারিসন শহর রাওয়ালপিন্ডির আদালতে ঘোষণা করা হয়। কট্টরপন্থী তেহরিক-ই-লাব্বাইক দলের সিনিয়র নেতা পীর এজাজ আশরাফি বলেন, ‘আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।’
দলের প্রধান ফায়ারব্রান্ডের আলেম খাদিম হুসেন রিজভির ভাই আমির হুসেন রিজভীও দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন।
আশরাফি এপিকে বলেন, ‘এটা কোনো বিচার করা হয়নি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।’
৮৬ জনের বিরুদ্ধে ওই বছরের শুরুতে আছিয়া বিবির খালাসের বিরুদ্ধে জনসম্পত্তি নষ্ট করা, লোকজনকে মারধর এবং জনসাধারণের জীবন ব্যাহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইসলামকে অবমাননার অভিযোগে ২০০৯ সালে আছিয়া বিবি দোষী সাব্যস্ত হলে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। প্রতিবেশীদের সাথে ঝগড়ার সময় তিনি নবীকে অবমাননা করেন বলে অভিযোগ করা হয়। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন।
দেশটির সুপ্রিম কোর্ট তার সাজা বাতিল করে দিলে পাকিস্তানে ইসলামপন্থী দলগুলো সহিংস বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু করে। কর্তৃপক্ষ আছিয়া বিবিকে গতবছর কানাডায় যাওয়ার অনুমতি দেয়ার আগে তাকে নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে রেখেছিল।
পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইনগুলো প্রায়শই শিয়া মুসলিমসহ সংখ্যালঘু ধর্মের অনুসারীদের ব্যবহার করা বা ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
গত বছর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহিংস সমাবেশে নেতৃত্বের জন্য রিজভিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য বিচারাধীন অবস্থায় জামিনে মুক্তি দেয়া হয়।
গত মাসে, পাকিস্তানের শহর মুলতানে একটি আদালত ইসলামবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে একজন মুসলিম অধ্যাপক জুনায়েদ হাফিজকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। তিনি ছয় বছর বিচারের অপেক্ষায় ছিলেন এবং বেশিরভাগ সময় নির্জন কারাগারে কাটান।
পাকিস্তানের বিশিষ্ট আইনজীবী এ. কে ডোগার বৃহস্পতিবারের রায়গুলোর সমালোচনা করে বলেন, বেশিরভাগ রায়ই ছিল প্রতীকী এবং দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে কেউই সর্বোচ্চ ২৫ বছর কারাগারে কাটাবেন না, যা পাকিস্তানের আইনে আজীবন কারাদণ্ডের সমতুল্য। ডোগার সাজা প্রাপ্ত তেহরিক-ই-লাব্বাইক সদস্যদের মামলায় জড়িত ছিলেন না।