পর্দার মতো বাস্তবেও প্রেম ছিল তাঁদের। তবে একসময় সেই প্রেম ভেঙে যায়। এরপর আর প্রকাশ্যে একসঙ্গে দেখা হয়নি তাঁদের। অবশেষে ১০ বছর পর গতকাল এক মঞ্চে দেখা মিলল দেব ও শুভশ্রীর। অনেক আগে কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘ধূমকেতু’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন তাঁরা। অবশেষে সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে। সেই সিনেমার ট্রেলার মুক্তির অনুষ্ঠান ছিল গতকাল। কলকাতায় সেই অনুষ্ঠানে দীর্ঘদিন পর একসঙ্গে দেখা গেল প্রাক্তন এই প্রেমিক যুগলকে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
এদিন হাতে হাত রেখে নজরুল মঞ্চে প্রবেশ করেন তাঁরা। হাতে হাত থাকলেও ছিল নির্দিষ্ট ব্যবধান। ১০ বছরের দূরত্ব ধরা পড়ছিল সেই ব্যবধানে। তবে পরিস্থিতি হালকা করতে বরাবরই পটু দেব। ‘প্রাক্তন’-এর সঙ্গে খুনসুটি শুরু করেন তিনিই। ক্রমে যোগ দেন শুভশ্রীও। তবে এটা যে শুধুই ছবির স্বার্থে, তা স্পষ্ট জানিয়ে দেয় বাংলা ছবির এই জনপ্রিয় জুটি। ১০ বছর আগে তাঁদের রসায়ন ছিল অন্য রকম। ৪ আগস্ট প্রেমিক-প্রেমিকার রসায়ন ধরা না পড়লেও তাঁদের কথাবার্তা বুঝিয়ে দেয়, অতীতে তাঁরা সত্যিই ‘প্রেমে’ ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করছিলেন রোহন ভট্টাচার্য। ‘দেব–শুভশ্রী কি পরস্পরের সমাজমাধ্যমে গোপনে উঁকি দেন?’ দেবের তীক্ষ্ণ জবাব, ‘শুভশ্রী এখন লেডি সুপারস্টার। ওকে দেখতে গেলে উঁকি দিতে লাগে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাতায় তাঁকে এমনই দেখা যায়। ও এখন এত জনপ্রিয়। আর যাঁকে আমরা চিনি না, তাঁদের পাতাতেই তো উঁকি দিই।’ এই ১০ বছরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হয়েছেন দেব-শুভশ্রী; কিন্তু কখনো কোনো কথা বলেননি পরস্পরের সঙ্গে। কথায় কথায় উঠে আসে কে কাকে সামাজিক মাধ্যমে ব্লক করেছিলেন। শুভশ্রী বলেই দেন, দেবই ব্লক করেছিলেন তাঁকে। সেই দূরত্বও তাঁরা এদিন ঘুচিয়ে দিলেন। এদিন মঞ্চেই ফের পরস্পরকে ইনস্টাগ্রামে অনুসরণ করলেন। উঠে আসে প্রচ্ছন্ন প্রতিযোগিতার কথাও। গত বছর একসঙ্গে মুক্তি পেয়েছিল রাজ চক্রবর্তীর ‘সন্তান’ এবং দেবের ‘খাদান’। সেই সময়ে নাকি ‘সন্তান’-এর প্রচারে শুভশ্রীর অর্থপূর্ণ হাসি দেখে নিজের ছবি ‘খাদান’-এর প্রচারের গতি ও মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন দেব। এ কথা উঠে আসতেই শুভশ্রী মজা করে বলেন, ‘আমার একটি হাসিই তা হলে প্রচারের গতি বাড়িয়ে দিতে পারে!’ সঙ্গে সঙ্গে হাসির রোল ওঠে দর্শকের মধ্যে।
কথা প্রসঙ্গে দেব বলেন, ‘সবই তো আমার!’ শুভশ্রীর পাল্টা রসিকতা, ‘ভাগ্যিস বলোনি, “সন্তান”ও তোমার।’ তার পরেই দেব পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর (শুভশ্রীর স্বামী) প্রশংসায় মাতেন। বলেন, ‘আমি আর রাজ সব মনের কথা বলে দিই অনায়াসে। এ ক্ষেত্রে আমরা দুজনই অনেকটা একরকমের।’ রোহন প্রায় প্রতিটি প্রশ্নই করছিলেন ভয়ে ভয়ে। তাই শুভশ্রীও দেবের দিকে খোঁচা দিয়ে বলেই ফেলেন, ‘আরে, আমাকে যা প্রশ্ন করার করতে পারো। কারণ, আমার অন্তত মার খাওয়ার কোনো ভয় নেই।’ শুভশ্রীর ইঙ্গিত কোন দিকে বুঝতে পেরে ফের হেসে ওঠেন দর্শক। তবে সব শেষে শুভশ্রী ও দেব জানান, তাঁরা পরস্পরের ভালো চান। এখন তাঁরা দুজনেই নিজেদের মতো করে জীবনে সুখী। পরস্পরকে শ্রদ্ধা ও পরস্পরের ভালো চাওয়া ছাড়া আর কিছু বাকি নেই। অনুষ্ঠান শেষ হয় দেব-শুভশ্রীর নাচ দিয়ে।
দেব-শুভশ্রীর সম্পর্কটা বিয়েতে গড়ানোর কথা ছিল। অনুরাগীরাও অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন, প্রিয় জুটির বিয়েটা দেখবেন। শুভশ্রীর পরিবারও নাকি দেবকে মেনে নিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত প্রেমটা ভেঙে যায়।