বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক লোপাট হয়, সোনালী ব্যাংক লোপাট হয়। এটা হচ্ছে হাসিনার অবদান। বিনা ভোটের মেয়র আতিক সিটি করপোরেশনে পদ তৈরি করেন, নাম রাখা হয় হিট অফিসার। সেই পদে নিয়োগ পেলেন তারই মেয়ে আর বেতন দিলেন লক্ষাধিক টাকা। সেই অফিসারের স্বামী সুপার হিরো, একশ’ কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগের দুর্নীতি আর হাসিনার অপকর্ম আরব্য উপন্যাসকেও হার মানাবে।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয় মাঠে শহীদ জিয়া ফুটবল টুর্নামেন্টের চতুর্থ আসরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রতিদিন ভারতের মিডিয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। একটা স্বাধীন দেশ নিয়ে তারা কীভাবে এত অপ্রচার করে। আমরা হিন্দু মুসলিম যুগ যুগ ধরে একত্রে শান্তিতে বসবাস করছি। সেই সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বাধীন বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার চালাবেন না। আপনারা পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করছেন। এটা করবেন না। বন্ধ করুন ষড়যন্ত্র।
জিয়াউর রহমানের অবদান তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, যুদ্ধের ময়দানে অদম্য সাহসিকতার প্রতীক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ৭ নভেম্বর ভয়ংকর কালো প্রতীকে জনগণ ও সিপাহীরা তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন। সেই থেকে আমরা কৃষকের মাঠে জিয়ার হাসি, শিল্পীর কালি মাখা মুখেও জিয়ার হাসি দেখতে পাই। কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে জিয়ার প্রাণবন্ত চেষ্টা আমরা দেখেছি। কারখানার উৎপাদনে, স্বাধীনতায় জিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। যা মুখে বলে শেষ করা যাবে না। সবখানেই কিংবদন্তির মতো বিচরণ করে গেছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
রিজভী বলেন, উন্নয়নের নামে মেগা প্রকল্প দেখিয়ে ডলার পাচার করেননি জিয়াউর রহমান। আওয়ামী নেতারা মেট্রোরেল, পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্পের নাম করে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে পাচার করেছেন। একজন এমপির কত আয়? আওয়ামী লীগের একজন এমপির ২৫০ মিলিয়ন পাউন্ড অর্থের অসংখ্য বাড়ি লন্ডনে। এরা অবৈধভাবে বিনা ভোটে ক্ষমতায় থেকেছেন সাড়ে ১৫ বছর। পাচার করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা।
তিনি বলেন, হাসিনা বলতেন-আমাকে তুমি ক্ষমতায় রাখ আর তোমরা যা ইচ্ছে করো। পুলিশের একজন আইজির বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ। আমাদের কাছে ঋণ আসে ১৮ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। আর সেই ঋণের ১৭ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে আওয়ামী লীগ। এটা শেখ হাসিনার অবদান।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অপতথ্য দিয়ে কুৎসা রটিয়েছেন। জিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছেন। কই আপনি তো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ভুলেও একটা বের করতে পারেননি। বরং আপনি পালিয়ে গেছেন, খালেদা জিয়া তো পালাননি। দুর্বিষহ দুঃশাসনকে তিনি বরন করেছেন। ভাঙা ভাঙা একটা বিল্ডিংয়ে দুই বছর তাকে (খালেদা জিয়া) আটকিয়ে রেখেছেন। তিনি তো পালাননি। আওয়ামী লীগ দুর্বৃত্তের দল। এটাই বিএনপি আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য।
তিনি আরও বলেন, ছোট বাচ্চা ছেলেরা রক্ত দিয়েছে। ২ হাজারের মতো তরুণকে আওয়ামী লীগ হত্যা করে প্রত্যাবর্তন করেছে। আমরা যুদ্ধ সংগ্রাম করে একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তারুণ্যের সেই অবদান, রংপুরের মেধাবী ছাত্র আবু সাইদের আত্মত্যাগ জাতি কখনই ভুলবে না।
এ সময় বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম রফিক, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামু, লালমনিরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক একেএম মমিনুল হকসহ রংপুর বিভাগের বিএনপির ১০টি সাংগঠনিক জেলার নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন। লালমনিরহাট জেলা বিএনপি আয়োজিত এ টুর্নামেন্টে রংপুর বিভাগের ১০টি সাংগঠনিক জেলা বিএনপি অংশ নিচ্ছেন। এ টুর্নামেন্টের প্রতিটি আসরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকছেন।