স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হলে বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিধি বাড়বে। সেই চাপ সামলাতে যথাযথ ও কার্যকর প্রকিউরমেন্ট (ক্রয়) আইনের বাস্তবায়ন জরুরি। পাশাপাশি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আয়োজিত ‘বিজনেস অপরচুনিটিস’ সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সরবরাহকারী, ঠিকাদার, পরামর্শদাতা, সরকারি কর্মকর্তাসহ প্রায় ৫০০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণ করেন। দিনব্যাপী কর্মসূচিতে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধি ও কূটনৈতিক মিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারের তথ্য উপস্থাপন করেন সংস্থাটির প্রিন্সিপাল প্রকিউরমেন্ট অফিসার মোহাম্মদ জুলিয়ামিনিয়ান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্পে ১১ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। এর বাইরেও ২৩৫ কোটি ৭০ লাখ ডলারের বিভিন্ন প্রকল্প ঠিকাদারের চুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। তাছাড়া আগে চুক্তি হওয়া ৪৭৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার এখনো ছাড় হয়নি। বাংলাদেশে এডিবির বর্তমান পোর্টফোলিওতে ১২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের ৫১টি প্রকল্প ও কর্মসূচি আছে।
সেমিনারের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহসানুল হক। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি ও বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য দেন এডিবির প্রকিউরমেন্ট ডিরেক্টর জেসপার পেডারসেন। তিনি বলেন, টেকসই, স্বচ্ছ ও দৃঢ় ফোকাস করা জরুরি। এডিবি এক্ষেত্রে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
সেমিনারে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেছেন, এডিবি দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উচ্চতর দক্ষতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়। কারণ বাংলাদেশকে তার অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করতে হবে। এছাড়া অর্থনৈতিক রূপান্তর চালানোর জন্য সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে। কেননা ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উত্তরণ করতে যাচ্ছে দেশটি। অর্থনীতি, দক্ষতা, ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা, গুণমান ও অর্থের মূল্য নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে কেনাকাটার সময় কমাতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কাজ করছে এডিবি। বেসরকারি খাতের কার্যক্রম সম্প্রসারণের বিষয়ে এডিবি কৌশলগত দিকনির্দেশনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, বেসরকারি খাতের ব্যবসার সুযোগগুলোকেও কাজে লাগানো দরকার।
এডিবি স্থানীয় শিল্পের বৃদ্ধিতে সহায়তার জন্য প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে। বাংলাদেশি ঠিকাদার ও পরামর্শদাতারা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে চুক্তিগুলো অর্জনে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য দেখাচ্ছে। যেহেতু এডিবির কার্যক্রম আগামী বছরগুলোতে বাড়বে। এই সুযোগগুলো আরও বৃদ্ধি পাবে। এডিবি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি সমর্থনকারী একটি শীর্ষস্থানীয় বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক। একসঙ্গে জটিল চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানের জন্য এর সদস্য ও অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে। এডিবি উদ্ভাবনী আর্থিক সরঞ্জাম ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব ব্যবহার করে জীবনকে রূপান্তরিত করতে, মানসম্পন্ন অবকাঠামো তৈরি করতে কাজ করছে।